বিশেষ প্রতিবেদন

দুরবস্থার মধ্যেই বেশিরভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

লোকসানে হাবুডুবু খাচ্ছে ছয়টি। আরও পাঁচটির মুনাফা গত বছরের তুলনায় কমে গেছে। তিনটির সম্পদমূল্য ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে। আরও পাঁচটির সম্পদমূল্য গত বছরের তুলনায় কমে গেছে। ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে ১০টির। এ চিত্র দেশে ব্যবসা করা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর।

Advertisement

এই প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত, তারল্য, মুনাফা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। দিন যত যাচ্ছে অব্যাংকিং আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্কট তত বাড়ছে। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা আরও করুণ হয়ে পড়েছে। সেই করুণ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না প্রতিষ্ঠানগুলো।

অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, মুনাফায় প্রবৃদ্ধি করা কঠিন হয়ে পড়েছে প্রায় সবকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। এমনকি বেশিরভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের সম্পদ ধরে রাখতে পারছে না। এর সঙ্গে তারল্য সঙ্কট তো আছেই। দিন যত যাচ্ছে আমানতকারীরাও বেশিরভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ফলে দুরবস্থায় পড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধুঁকতেই হচ্ছে।

নিয়ম অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে প্রতি তিন মাস পর পর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। এরই আলোকে তালিকাভুক্ত ২৩টি অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২২টি চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের পাশাপাশি জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

Advertisement

প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান গত বছরের তুলনায় ভালো করেছে। এরপরও লোকসানের খাতায় নাম লিখিয়েছে সাতটি প্রতিষ্ঠান। অবশ্য গত বছর লোকসানে পড়া চারটি প্রতিষ্ঠান এই প্রান্তিকে মুনাফা করে দেখিয়েছে। পাশাপাশি আরও ১১টি প্রতিষ্ঠানের মুনাফা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে।

এরপরও সার্বিকভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুরবস্থার মধ্যেই রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ের আর্থিক প্রতিবেদন সেই তথ্যই দিচ্ছে। যদিও জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর এই ৯ মাসের ব্যবসায় ১০টি প্রতিষ্ঠানের মুনাফা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে লোকসানের মধ্যে নিমজ্জিত রয়েছে ছয়টি এবং পাঁচটির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কমেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সবচেয়ে খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল)। চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে চার টাকা। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে সেই লোকসান বেড়ে হয়েছে ১১ টাকা ৩৮ পয়সা।

কোম্পানিটি এতটাই দুরবস্থার মধ্যে রয়েছে যে, বর্তমানে সম্পদের পরিমাণ ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে একটি শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানিটির সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ১২৫ টাকা ১ পয়সা, যা গত বছর ছিল ১১৩ টাকা ৬৩ পয়সা। সম্পদ ঋণাত্মক হয়ে পড়ার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির নগদ অর্থেও টান পড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৭ টাকা ৫৪ পয়সা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৬ টাকা ১৬ পয়সা।

Advertisement

আইএলএফএসএল’র পাশাপাশি লোকসানে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি), ফ্যাস ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল এবং উত্তরা ফাইন্যান্স। এর মধ্যে বিআইএফসি ও ফ্যাস ফাইন্যান্সের সম্পদমূল্যও ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে।

লোকসানে নিমজ্জিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর চিত্র

কোম্পানির নাম

শেয়ারপ্রতি মুনাফা

শেয়ারপ্রতি মুনাফা

শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য

শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো

২০২০ জুলাই-সেপ্টেম্বর

২০১৯ জুলাই-সেপ্টেম্বর

২০২০ জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর

২০১৯

জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর

২০২০

সেপ্টেম্বর

২০১৯

সেপ্টেম্বর

২০২০ জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর

২০১৯

জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর

বিআইএফসি

(১.০১)

(১.৯৬)

(৪.৭৯)

(৫.৫৩)

(৮৪.২৪)

(৭১.৯৩)

(১.০৭)

(২.৭২)

ফারইস্ট ফাইন্যান্স

(.৫৯)

(২.৬৩)

(১.৭০)

(৬.০৮)

১.১৫

২.৫৮

১.৩০

(.৮১)

ফ্যাস ফাইন্যান্স

(২.৬৬)

.০১

(৮.৫৪)

.১৫

(৬.৬১)

১.৯৩

(.০২)

(৯.৪৮)

ফার্স্ট ফাইন্যান্স

(১.১৩)

(১.১৭)

(৩.২৯)

(৩.১৬)

৪.১০

৭.৭২

(৯.১৫)

৭.৫০

আইএলএফএসএল

(৪.০০)

.০২

(১১.৩৮)

.১১

(১২৫.০১)

(১১৩.৬৩)

(৭.৫৪)

(৬.১৬)

ইউনিয়ন ক্যাপিটাল

(১.২৩)

(১.৩৭)

(২.৬৩)

(১.১৩)

৪.৫৮

৭.২১

(১.১৮)

১.১৭

উত্তরা ফাইন্যান্স

(১.১৯)

২.৬৮

১.৬৮

৮.৭৩

৬৪.১৩

৬২.৪৫

১২.৭৮

১৫.৬৪

এদিকে মুনাফায় থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মুনাফা গত বছরের তুলনায় কমেছে। এগুলো হলো-ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং (ডিবিএইচ), আইপিডিসি ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স এবং উত্তরা ফাইন্যান্স।

এর মধ্যে উত্তরা ফাইন্যান্স জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ১ টাকা ১৯ পয়সা। এতে জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর এই ৯ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৬৮ পয়সা। অথচ গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ৮ টাকা ৬৭৩ পয়সা মুনাফা করে। মুনাফায় বড় ধাক্কা খেলেও সম্পদ ও তারল্যের দিক থেকে ভালো অবস্থানে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

মুনাফা কমে যাওয়া বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিডিএইচ চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৩ টাকা ৫৫ পয়সা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫ টাকা ৩২ পয়সা। মুনাফার পাশাপাশি কোম্পানিটির সম্পদও কমে গেছে। সেপ্টেম্বর শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৩৯ টাকা ৫২ পয়সা, যা আগে ছিল ৪১ টাকা ৪৫ পয়সা। ৯ মাসের হিসাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে মুনাফার প্রবৃদ্ধি হয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৭৯ পয়সা, যা গত বছরের এই সময়ে ছিল ১ টাকা ৫৩ পয়সা।

বিডিএইচ’র মতো চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আইপিডিসি, প্রাইম ফাইন্যান্স ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু আগের প্রান্তিকগুলোতে ভালো ব্যবসা করতে না পারায় ৯ মাসের হিসাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কমেছে।

ইউনাইটেড ফাইন্যান্স জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ২৩ পয়সা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২২ পয়সা। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৫০ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯৩ পয়সা। ৯ মাসের হিসাবে মুনাফা কমার পাশাপাশি কোম্পানিটির নগদ অর্থেও টান পড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৪ টাকা ৩ পয়সা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ঋণাত্মক ১ টাকা ১০ পয়সা।

আইপিডিসি ফাইন্যান্স চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৫০ পয়সা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩৯ পয়সা। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৩৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪২ পয়সা।

অপর প্রতিষ্ঠান প্রাইম ফাইন্যান্স জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ১২ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ২ পয়সা। শেষ প্রান্তিকের মুনাফায় বড় প্রবৃদ্ধি হলেও জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর এই ৯ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে মাত্র ৩ পয়সা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৭ পয়সা।

এদিকে সঙ্কটের মধ্যেও কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান মুনাফায় প্রবৃদ্ধি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে— বে-লিজিং, বিডি ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, আইসিবি, আইডিএলসি, ইসলামিক ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, মাইডস ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল হাউজিং এবং ফিনিক্স ফাইন্যান্স। এর মধ্যে বিডি ফাইন্যান্স, আইসিবি, লংকাবাংলা ও মাইডস ফাইন্যান্স লোকসান কাটিয়ে মুনাফার দেখা পেয়েছে। অবশ্য আইসিবি, মাইডস, ন্যাশনাল ও প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে।

মুনাফা বাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর চিত্র

কোম্পানির নাম

শেয়ারপ্রতি মুনাফা

শেয়ারপ্রতি মুনাফা

শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য

শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো

২০২০ জুলাই-সেপ্টেম্বর

২০১৯ জুলাই-সেপ্টেম্বর

২০২০ জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর

২০১৯

জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর

২০২০

সেপ্টেম্বর

২০১৯

সেপ্টেম্বর

২০২০ জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর

২০১৯

জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর

বে-লিজিং

.৯৩

.০২

১.০৪

.২৬

২০.৬৫

১৯.৮০

২.১১

১.৩৮

বিডি ফাইন্যান্স

.৫৫

(.০৯)

১.০২

.১৪

১৭.৩৯

১৬.৩৭

২.৯৮

(.২৭)

জিএসপি ফাইন্যান্স

.৪৪

.৪১

১.১১

১.১৫

২১.৪৭

২০.৩৬

১.৬৭

.৮০

আইসিবি

.৪০

(১.৭৫)

   

৫৭.২৫

৫৬.৮০

(৪.৮৩)

(৪.৭১)

আইডিএলসি

২.৫১

.৬৮

৪.২৭

৩.৩৫

৩৭.৯৫

৩৭.১৮

২৯.৬৯

৬.২৭

ইসলামিক ফাইন্যান্স

.২৯

.২৮

.৯৯

.৯৪

১৪.৪৫

১৪.০০

৬.৩৩

(৯.৬২)

লংকাবাংলা ফাইন্যান্স

.৭৪

(.০০২)

.৮৮

.৪৮

১৭.৮১

১৭.৬০

১০.৫৮

(৬.৪৭)

মাইডস ফাইন্যান্স

.৩৮

(.২৯)

.৩১

(১.১২)

১১.১৭

১১.৩৮

(.১৫)

(২.৫২)

ন্যাশনাল হাউজিং

১.৩৩

.২১

২.১৩

১.৪৫

১৮.৩০

১৬.১৭

(৭.৬৭)

(২৫.৮৩)

ফিনিক্স ফাইন্যান্স

.২৬

.২৬

.৮১

.৮৯

২৩.৩১

২২.৫০

১.০১

১.৩২

প্রিমিয়ার লিজিং

.০৯

.০৩

.১১

.০৯

১৯.০৩

১৮.৪৬

(.৯৪)

(১.৩৭)

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক দিন ধরেই গ্রাহকের আস্থা সঙ্কটে ভুগছে। করোনার কারণে এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে আমরা তেমন আমানত পাইনি। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়েছে তা বলা যাবে না। এরপরও অনেকগুলো আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ সময়ে মুনাফার প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। আমার ধারণা, সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রতিবেদনে তাদের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেনি। কেউ কেউ প্রভিশন না রেখে মুনাফা বাড়িয়ে দেখিয়েছে। এটা ভবিষ্যতের জন্য আরও খারাপ হবে।  

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) চেয়ারম্যান ও আইপিডিসি ফাইন্যান্সের এমডি মমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান বেশ ভালো করছে এবং মানুষের আস্থাও আছে। মুনাফা ও খেলাপি ঋণের পরিস্থিতি ভালো। তবে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও পিপলস লিজিংয়ের ঘটনার পর ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোতে এক ধরনের আস্থা সঙ্কট দেখা দেয়। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে মানুষ ডিপোজিট (আমানত) তুলে নিচ্ছে। অবশ্য এখন তারল্য পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। সুতরাং যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ডিফিকাল্টির মধ্যে রয়েছে তারা ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমরা আশাবাদী।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের করপোরেট সিস্টেম যদি ঠিক থাকে এবং শক্তিশালী ম্যানেজমেন্ট থাকে, তাহলে সেসব প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকরা আমানত রাখতে দ্বিধা করছে না। এটা ব্যাংক হোক বা নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান হোক, যেসব প্রতিষ্ঠানে সমস্যা আছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে সাধারণত তো ডিপোজিট রাখবে না।

মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, এ বছর শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে একটা ছাড় দিয়েছে। এ কারণে হয়তো অনেকে একটু বেশি প্রফিট দেখিয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড় দেয়ার পরও আমরা (আইপিডিসি) নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে অতিরিক্ত প্রভিশন রেখেছি। এরপরও আমরা মুনাফায় আছি। আমার আশা, যারা ভালো তারা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন না দিলেও অতিরিক্ত প্রভিশন করে রাখবে। এটা ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে।

এমএএস/এমএসএইচ/এইচএ/এমকেএইচ