সাতক্ষীরা শহরের জজকোর্ট চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে মাস্ক বিক্রি করে ৯ বছরের শিশু তরিকুল ইসলাম। বাবার রোজগারের পাশাপাশি মাস্ক বিক্রির লাভের টাকায় চলে তার পরিবার। বাবার কাছে দীর্ঘদিন একটি বাইসাইকেল দাবি করলেও পরিবারের আর্থিক অভাব অনটনের কারণে সেটি দিতে পারেননি তরিকুলের বাবা। তার স্বপ্ন এবার পূরণ হয়েছে। হৃদয়বান এক ব্যক্তির (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) টাকায় তরিকুলকে দেয়া হয়েছে একটি বাইসাইকেল।
Advertisement
সম্প্রতি তরিকুল ইসলামের মাস্ক বিক্রি ও পরিবারের কথা তুলে ধরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজে ‘মাস্ক বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে ৯ বছরের তরিকুল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এছাড়া সংবাদটি প্রকাশ পায় বিভিন্ন গণমাধ্যমেও।
সংবাদটি দেখার পর সাইকেল কিনতে টাকা পাঠান ওই ব্যক্তি। সেই টাকায় সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় তরিকুলের হাতে একটি বাইসাইকেল তুলে দেয়া হয়। অবশিষ্ট টাকা দেয়া হয়েছে তার পরিবারের কাছে।
তরিকুল ইসলাম সাতক্ষীরা শহরের মধুমল্লারডাঙ্গী এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। সাইকেলটি পাওয়ার পর আনন্দিত তরিকুল বলে, ‘আমার স্বপ্ন ছিল একটি বাইসাইকেলের। বাবাকে বলেছি অনেকবার তবে দিতে পারেননি। আমাকে যে ভাইয়া সাইকেলটি দিয়েছেন তাকে ধন্যবাদ জানাই। এবার আমি সাইকেল চালিয়ে মাস্ক বিক্রি করতে পারব।’
Advertisement
সে আরও বলে, প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকার মাস্ক বিক্রি করি। এখন বিক্রি আরও বেশি হবে।
শিশু তরিকুলের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অসুস্থ মানুষ। এখন ঠিকমতো ভ্যানও চালাতে পারি না। তবে তরিকুল মাস্ক বিক্রি করে লাভের টাকা মায়ের হাতে দেয়। সংসারের খরচের কাজে লাগে। অভাবী হওয়ায় ছেলেটা একটা সাইকেল আবদার করলেও সেটি পূরণ করতে পারিনি।’
প্রতিবেশী রবিউল ইসলাম বলেন, তরিকুল খুব ভালো ছেলে। কখনো কারও সঙ্গে ঝগড়া করেনি। বড়দের সম্মান দিয়ে চলাফেরা করে। ছোট হলেও অনেক কিছু বোঝে। সবাই তাকে স্নেহ করে।
সাইকেলটি তরিকুল ইসলামকে তুলে দেয়ার সময় শ্যামনগর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুর রহমান, সাংবাদিক আকরামুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম শুভ, আবু সাঈদ সরদার, জিয়াউর রহমান, রিয়াজ, আলিফসহ শিশুটির পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
আকরামুল ইসলাম/এসজে/জিকেএস