বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় অপ্রাপ্তবয়স্ক সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামির জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পাঁচ বছরের সাজার বিরুদ্ধে ওই তিন আসামির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন আদালত।
Advertisement
হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে এ আদেশের তথ্য জানান সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, তিনজনের মধ্যে ৬ জানুয়ারি একজন এবং ১৩ জানুয়ারি অপর দুজনকে হাইকোর্ট থেকে জামিন দিয়েছেন। তিনজনের পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাদের করা পৃথক আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন।
এর আগে ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান। রায়ে ছয় আসামিকে ১০ বছর করে, চার আসামিকে পাঁচ বছর করে এবং এক আসামিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। বাকি তিন আসামিকে খালাশ দেন আদালত।
Advertisement
এছাড়া এ মামলায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা দায়রা ও জজ মো. আছাদুজ্জামান। ১০ আসামির মধ্যে নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকাসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
এর কয়েক দিন পর ওই বছরের ৩ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। পরদিন ৪ অক্টোবর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। এরপর নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল দাখিল করেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামি। এখন মামলাটির পেপারবুক ছাপা হয়ে হাইকোর্টে আসার পর প্রধান বিচারপতি মামলাটির বিচারের জন্য একটি বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। তারপর ওই আপিলেরও শুনানি শুরু হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনায় পরদিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ছিলেন এ মামলার প্রধান সাক্ষী।
মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ওই বছরের ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। ১ সেপ্টেম্বর মামলায় ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দুভাগে বিভক্ত করে আদালতে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়।
Advertisement
এফএইচ/ইএ/এআরএ/এমএস/জেআইএম