বিশ্ববিখ্যাত ইসলামিক স্কলার শায়খ আলি জাবের আল-হাদরামি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইন্দোনেশিয়ার ইয়ারসি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
Advertisement
শায়খ আলি বিন সালেহ বিন মুহাম্মাদ বিন আলি জাবের আল হাদরামি ইন্দোনেশিয়ার প্রখ্যাত আলেম এবং প্রভাবশালী দাঈ ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া আল ইয়াওম, সৌদির শিক্ষা, ইতিহাস ও দাওয়াত বিষয়ক ব্যক্তিত্ব আবু উসামাসহ আরববিশ্বের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও অনেক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গভীর শোক জানিয়েছেন।
আলজাজিরা জানিয়েছে, মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৯ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। অবশেষে ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী ইসলামিক স্কলার ও ধর্ম প্রচারক শায়খ আলি জাবেরকে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তাংরাং-এর মাহাদ দারুল কুরআনের পাশে অবস্থিত কবরস্থানে দাফন করা হয়।
কে এই আলি জাবের আল-হাদরামি
Advertisement
১৯৭৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি শায়খ আলি বিন সালেহ বিন মুহাম্মাদ বিন আলি জাবের আল হাদরামি পবিত্র নগরী মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন। ১০ বছর বয়সে পবিত্র কুরআন হেফজ সম্পন্ন করেন।
মক্কা, মদিনা, রিয়াদ, আল-কসিমসহ সৌদির বিভিন্ন অঞ্চলের আলেমদের কাছে তিনি ফেকাহ, হাদিস, তাফসির ও তাওহিদ বিষয়ে ইসলামি ও আধুনিক জ্ঞান অর্জন করেন। শায়খ খলিল আবদুর রহমান, শায়খ মহাম্মদ আদ দেহলভি ও শায়খ আবু জানাদ আবদুত তাওয়াবসহ বিভিন্ন আলেমদের কাছে ইলমে কেরাতের উপর বিশেষ উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন।
২০০৮ সালে শায়খ আলি জাবের প্রথম বারের মতো ইন্দোনেশিয়ায় সফর করেন। স্থানীয় ভাষা শিখে ইসলাম বিষয়ক বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে জনসাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেন। বিভিন্ন প্রোগ্রামের পাশাপাশি জাকার্তার সোন্দা ক্লাবা মসজিদে তারাবিহ নামাজ পড়ান।
২০১১ সালে এ ইসলামিক স্কলারকে ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং ইউধোইয়োনো দেশটির নাগরিকত্ব প্রদান করেন। গত এক দশকে ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশে তিনি ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। ইন্দোনিশয়াসহ মুসলিম বিশ্বে তিনি জনপ্রিয় ইসলামিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হন।
Advertisement
রমজান মাসসহ বিভিন্ন সময়ে শিশুদের জন্য কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। কুরআন প্রেমিক এ শায়খ শুধু ইন্দোনেশিয়াতেই নয়, বরং ইসলামিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্রায়ই ব্রুনেই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং ও তাইওয়ানসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করতেন।
শায়খ আলি জাবের ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে কুরআন প্রচার-প্রসারে অনেক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হংয়। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল ভাষায় লিখিত পবিত্র কুরআন বিতরণসহ নানা ধরনের জনসেবামূলক কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি।
আল্লাহ তাআলা কুরআন প্রেমিক ইসলামের এ প্রচারককে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ