কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার লেমশীখালী ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোছাইন ও ইউপির ৯ সদস্যসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে অভিযোগ করা হয়েছে।
Advertisement
ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্চাছারিতা, ঘুষ ও দুর্নীতিসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তুলে লেমশীখালী ইউনিয়নের ১১ জন সচেতন নাগরিক ১০ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগটি করেন।
অভিযুক্তরা হলেন- লেমশীখালী ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন, ৭নং ওয়ার্ড সদস্য নাজেম উদ্দিন, ৯নং ওয়ার্ড সদস্য নেজামুল হক, ৬নং ওয়ার্ড সদস্য আবু মুছা, ৫নং ওয়ার্ড সদস্য নুরুল হক, ৪নং ওয়ার্ড সদস্য নূর মোহাম্মদ, ৮নং ওয়ার্ড সদস্য গিয়াস উদ্দিন, ২নং ওয়ার্ড সদস্য নুরুল ইসলাম, ১নং ওয়ার্ড সদস্য আবদুর রশিদ, ৩নং ওয়ার্ড সদস্য মো. ইসহাক এবং স্থানীয় তারেক, হুমায়ুন কবির, সফি আলম ও মো. কায়সার।
কুতুবদিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও লেমশীখালীর বাসিন্দা অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমদ, ব্যবসায়ী রফিক আহমদ সিকদার, মোকতার হোসেন, নুরুল ইসলাম ভূট্টো, নূরুল আমিন, খোরশেদ আলম, মোরশেদ আলম, ছাবের আহমদ বাদশা, দেলোয়ার হোসেন, ফজল কাদের ও গোলাম রহমান স্বাক্ষরিত এ অভিযোগ দুদকে জমা দেয়া হয়।
Advertisement
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, লেমশীখালী ইউনিয়নের অন্তর্গত গাইনের জোরাসহ তিনটি লবণ ঘাট, লবন পরিবহনসহ মালামাল পারাপারে টোল আদায়ের নিমিত্তে ইজারা দেয়া হয়। বিগত ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০২০ সালের জন্য দ্বিতীয় হতে দশম অভিযোগকারীকে যৌথভাবে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকায় ইজারা দেয়া হয়।
নিয়মমতো সব চললেও গত বছর ইজারার টোল আদায়ে স্থানীয় কবির আহমদের ছেলে কায়ছারকে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিদিন তোলা টাকার হিসাব না দিয়ে, তা কায়ছার আত্মসাত করে ফেলে।
বিষয়টি জানার পর মোক্তার হোছন বাদী হয়ে কুতুবদিয়া জুড়িসিয়্যাল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত বিষয়টির প্রতিবেদন দিতে চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেন।
এক লাখ ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে লবণ ঘাটের প্রকাশ্য নিলাম ডাকের নোটিশ গোপন করে কায়ছারকে ডাককারী দেখিয়ে কাগজ তৈরি করা হয়। আর ডাক দেখানো হয় মাত্র এক লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
Advertisement
কিন্তু কায়ছারের কাছ থেকে পূর্বের ডাকের তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা ছাড়াও আরো ৭০ হাজার টাকা নিয়ে নথিতে উল্লেখ করা টাকা, কোষাগারে জমা দেখানো হয়। বাকি টাকা চেয়ারম্যান-মেম্বারটা ভাগবাটোয়ারা করে নেন। আর পূর্ব ডাককারীদের স্থলে কায়ছারকে টোল আদায়কারী নিযুক্ত করা হয়।
এদিকে চেয়ারম্যানদের দেয়া ঘুষের টাকাসহ ইজারার টাকা তুলতে যেমন ইচ্ছে টোল আদায় করছেন কায়ছার।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, লবণ ও মালামাল পরিবহনের তিনটি লবণ ঘাটের নিলামে এ পর্যন্ত কমপক্ষে দশ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান ও তার সিন্ডিকেট মেম্বারগণ। পাশাপাশি সরকারকে বঞ্চিত করেছে প্রায় ২০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকেও। দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয় আবেদনটিতে।
অভিযোগের বিষয়ে টোল আদায়কারি মোহাম্মদ কায়ছারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
লেমশীখালী ইউপির অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বলেন, সমস্ত কিছু নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। টাকা আত্মসাতের কোনো প্রশ্নই আসে না। দুদক তদন্ত করলে অভিযোগের সবকিছু নেগেটিভই পাবে আশা করছি।
সায়ীদ আলমগীর/এসএমএম/এমকেএইচ