দেশজুড়ে

পালিয়েছেন ঋণ গ্রহিতা, জামিনদার হয়ে জেল খাটছেন দরিদ্র দর্জি

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ঝি কলকতি গ্রামের দরিদ্র দর্জি দুলাল হোসেন (৩৫) এক ব্যক্তির ক্ষুদ্র ঋণের জামিনদার হয়ে জেল খাটছেন। ১০ বছর আগে হাসিনুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার সময় দুলালকে জামিনদার বানিয়েছিলেন। কিন্তু ঋণ শোধ না করে তিনি পালিয়ে যাওয়ায় এখন ফেঁসে গেছেন দুলাল। ৬ জানুয়ারি ভাঙ্গুড়া থানার পুলিশ দুলালকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

তবে দুলালের স্বজনদের দাবি, ১০ বছর আগে দুলাল যে ঋণের জামিনদার হয়েছেন তা তিনি কখনোই বুঝতে পারেননি। তার কাছে ব্যবসায়ী হাসিনুর বলেছিলেন, ‘টাকা তোলার জন্য শুধু তার (দুলালের) একটি স্বাক্ষর লাগবে’, বলে দাবি তাদের। এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া ব্র্যাক ব্যাংক এর শাখা ব্যবস্থাপক এম কে মুকুল ও ঋণ আদায় সংক্রান্ত অফিসার গাফফার হোসেন বলেন, হাসিনুর রহমান তাদের ব্যাংক থেকে ২০১০ সালে ৬ লাখ টাকা এসএমই ঋণ নেন। আর এর জামিনদার ছিলেন ঝি কলকতি গ্রামের দুলাল হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম। হাসিনুর ২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা পরিশোধের পর কিস্তি বন্ধ করে দেন। ফলে সুদ ও আসল মিলে মোট ১২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা দাবি করে তার বিরুদ্ধে অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করা হয়। আদালত তাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। হাসিনুর ও জাহাঙ্গীর পলাতক থাকলেও দুলালকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

দুলালের বাবা আয়নাল হক জানান, তার ছেলে দরিদ্র একজন দর্জি। স্বল্প আয়ে কোনো রকমে সংসার চলে তার। হাসিনুর রহমান ২০১০ সালে ঋণ নেন। ঋণ নেয়ার সময় হাসিনুর তার ছেলেকে বলেছিলেন, ‘ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার জন্য দুলালের একটি স্বাক্ষর লাগবে। এর পর থেকে দুলাল আর কিছু জানেন না।’ হঠাৎ ৬ জানুয়ারি ভাঙ্গুড়া থানার পুলিশ দুলালকে ধরে নিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। এরপর থেকে দুলাল কারাাগরে রয়েছেন।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আশরাফুজ্জামান জানান, তিনি বিষয়টি এ সংবাদদাতার কাছেই প্রথম শুনলেন। ওই ব্যাংক যদি নিয়ম মেনে কাজ না করে থাকে এবং সুস্পষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Advertisement

আমিন ইসলাম/এমএইচআর