দুই বছর আগে (২০১৮ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে) সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে এসে টেস্ট আর ওয়ানডে সিরিজে একদমই পেরে ওঠেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই টেস্টের সিরিজে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করেছিল টাইগাররা। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে ৬৪ রানে জেতার পর ঢাকার শেরে বাংলায় ইনিংস ও ১৮৪ রানে ক্যারিবীয়দের চরমভাবে পর্যুদস্ত করেছিল সাকিবের বাংলাদেশ।
Advertisement
এরপর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও শেষ হাসি হেসেছিল টাইগাররা, ২-১ ‘এ জিতেছিল সিরিজ। যদিও টি-টোয়েন্টি সিরিজে ঘুরে দাঁড়ায় ক্যারিবীয়রা। বাংলাদেশ একটি ম্যাচ জিতলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিয়েই দেশে ফেরে অতিথি দল।
২০১৮ সালের তুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের এবারের ওয়ানডে আর টেস্ট দল অনেকটাই দুর্বল। নামের পাশে ‘তারকা’ লেভেল আঁটা কেউ নেই। প্রতিষ্ঠিত পারফরমারও নেই তেমন। এক ঝাঁক নতুন, অনভিজ্ঞ পারফরমার নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে ক্যারিবীয়রা।
পূর্ণশক্তির দলই পারেনি। এমন ‘দুর্বল’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ঘরের মাঠের টাইগারদের কতটা চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে? ক্যারিবীয় ভক্তরাই নিশ্চয়ই সংশয়ে। সবাই বলতে গেলে বাংলাদেশকে ‘ফেবারিট’ ধরে বসে আছেন।
Advertisement
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের হেড কোচ ফিল সিমন্সও মেনে নিলেন, আসন্ন সিরিজে বাংলাদেশই ফেবারিট। ঢাকায় পা রাখার ৯৬ ঘন্টার মাথায় ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসান ক্যারিবীয় কোচ। যদিও নিজের দলকেও দুর্বল মানছেন না তিনি।
বাংলাদেশ কেন ফেবারিট? তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোচ বলেন, ‘বাংলাদেশ স্পষ্ট ফেভারিট। কারণ তারা ঘরের মাঠে ভালো খেলে। আমরা এটির সাথে দ্বিমত করতে পারি না।’
দুই দলের অভিজ্ঞতায় বিস্তর ফারাক। বাংলাদেশের অন্তত জনচারেক ক্রিকেটার আছেন, যারা ক্যারিবীয় দলটির তুলনায় অনেক বেশি ম্যাচ খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলার অভিজ্ঞতা স্বাগতিক দলের ক্রিকেটারদেরই বেশি।
সেটা কি পার্থক্য গড়ে দেবে? ফিল সিমন্স কিন্তু তা মনে করেন না। তার কথা, ‘অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কিছু কিছু সময় উদ্যম এবং জয়ের ক্ষুধা অভিজ্ঞতাকে পরাস্ত করে। আমাদেরও কিছু অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছে।’
Advertisement
এমন ভাঙাচোরা, দুর্বল দল নিয়ে এই সিরিজ থেকে কি নিয়ে দেশে ফিরতে চান? এমন প্রশ্নর জবাবে সিমন্স কিন্তু একবারের জন্য বলেননি তার দল পারবে না। বাংলাদেশকে ঘরের মাঠে শক্তিশালী মানলেও সিরিজ জয়ের লক্ষ্যের কথােই জানালেন তিনি।
সিমন্স বলেন, ‘যে কোনো সিরিজ খেলার আগে লক্ষ্যটা থাকে জয়ের। প্রতিটি দল তাদের ঘরের মাঠে ভালো খেলে। সেদিক থেকে কাজটা সহজ হবে না। তবে আমাদের প্রথম লক্ষ্য সিরিজ জেতা। দ্বিতীয়ত, আমাদের ক্রিকেটারদের প্রস্তুত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। আমরা যদি ভালো প্রস্তুতি নেই, তাহলে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ভালো করার সুযোগ থাকবে।’
এমন এক দুর্বল দলকে কিভাবে অনুপ্রাণিত করবেন? ক্যারিবীয় কোচের কথা, ‘এই ছেলেদের অনুপ্রাণিত করা কঠিন নয়। এখানে যারা আছে তাদের সবাই সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত। তারা জায়গা দখল করতে চায়। আগেও বলেছি, সামনে আমাদের অনেক খেলা আছে এই বছর। সবাই সেদিক থেকে বেশ অনুপ্রাণিত।’
এই সিরিজ থেকে প্রত্যাশার কথা জানতে চাওয়া হলে সিমন্স ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা ওয়ানডে সিরিজ জয়ের উদ্দেশ্যেই ক্যারিবিয়ান ছেড়েছি। আপনারা হয়তো বলছেন আমাদের পুরো দল নেই। কিন্তু আমাদের এমন একটি দল আছে, যারা এই কন্ডিশনে জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত।’
এআরবি/এমএমআর/এমএস