মালয়েশিয়ায় বিপুল পরিমাণ জাল পাসপোর্টসহ দুই বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। সোমবার (১১ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ইমিগ্রেশন বিভাগের ইন্টেলিজেন্স ডিভিশন থেকে অভিবাসন অফিসারদের সমন্বয়ে বিশেষ অভিযান চালানো হয়।
Advertisement
এ সময় চেরাস, সেলাঙ্গরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে প্রচুর জাল পাসপোর্টসহ বাংলাদেশি ও সিআইডিবি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে দুই বাংলাদেশিকে। এ বিষয়ে ১২ জানুয়ারি ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রধান দাতুক সেরি খাইরুল দিজাইমি দাউদ এক প্রেস ব্রিফিং বলেন, দীর্ঘদিন থেকে ইমিগ্রেশনের ডকুমেন্ট ভুয়া কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল একটি চক্র।
‘এই চক্রের সন্দেহভাজন ব্যক্তি একজন বাংলাদেশি। যিনি ২০১৭ সাল থেকে ইমিগ্রেশন ডকুমেন্ট জালিয়াতি সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমন অভিযোগে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর গোয়েন্দা, বিশেষ অপারেশন এবং অ্যানালাইসিস বিভাগ কুয়ালালামপুরের জালান মেডান পাসারে অভিযান চালিয়ে জালিয়াতির প্রমাণ মেলে।’
তিনি বলেন, ওই অভিযানে দু’জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই জালিয়াতি কর্মকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী একজন বাংলাদেশি। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১১ জানুয়ারি সোমবার ওই বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়।’
Advertisement
ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক বলেন, গত বছরের মার্চ মাসে মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (পিকেপি) প্রয়োগ করা হলে সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করার আগ পর্যন্ত ট্র্যাক করার চেষ্টা অব্যাহত থাকে। ১১ জানুয়ারি বিশেষ অভিযানে এই চক্রের হোতাকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি জালিয়াতি কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন নথি ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
চক্রটি হোয়াটসঅ্যাপ এবং মিডলম্যানের মাধ্যমে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া এবং মিয়ানমারের নাগরিক সমন্বিত গ্রাহকদের কাছ থেকে পাসপোর্ট এবং অর্থ সংগ্রহ করত। এক্ষেত্রে ওয়ার্কিং ভিজিট পাস (পিএলকেএস) স্টিকারের জন্য ৩০০ রিঙ্গিত বিভিন্ন দেশের নকল পাসপোর্টের জন্য একটি জাল সিআইডিবি কার্ড এবং কার্ডের জন্য প্রত্যেককে ২০ রিঙ্গিত থেকে ১৫০ রিঙ্গিত আদায় করত।
গোয়েন্দা সংস্থা, বিশেষ অভিযান ও বিশ্লেষণ বিভাগের কর্মকর্তাদের তদন্তে ঘটনাস্থলে থাকা আরও একজন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করে। অভিযানে মোট ৮,৩০০ রিঙ্গিত নগদ, ৬২টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ মিয়ানমার ইন্দোনেশিয়ান বহু দেশীয় পাসপোর্টের মোড়ক, ৮ নন-প্রিন্টেড জাল স্টিকার, ১১টি মুদ্রিত স্টিকার, মুদ্রিত জাল সিআইডিবি কার্ড, প্রিন্টেড সাদা পিইউ কার্ড ৫, কম্পিউটার (পিসি), প্রিন্টার, পিইউ কার্ড এম্বোস মেশিন, লেমিনেটিং মেশিন, কোম্পানির রাবার স্ট্যাম্প, ব্যবসায়ী কার্ড, বাড়ির চাবি এবং বিভিন্ন জালিয়াতি সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারদের ডিপোতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৬৩ এর পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য অভিযুক্তকে ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৫৫৩ এর ৫৫ ডি ধারায় ৩০ হাজার রিঙ্গিত জরিমানা এবং ১০ বছরের বেশি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক।
Advertisement
এমআরএম/এমএস