হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক আমির আল্লামা আহমদ শফীকে ‘হত্যা’র অভিযোগ তদন্তে হাটহাজারী মাদরাসা পরিদর্শন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্ত কর্মকর্তাসহ পিবিআই কর্মকর্তারা হেফাজত ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
Advertisement
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় হাটহাজারী মাদরাসায় যান পিবিআই কর্মকর্তারা। ঘণ্টাখানেক তারা মাদরাসায় অবস্থান করেন।
পিবিআই চট্টগ্রামের পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) কাজী এনায়েত কবীর জাগো নিউজকে বলেন, ‘মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর আজ প্রথমবারের মতো মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ পিবিআই কর্মকর্তারা হাটহাজারী মাদরাসায় গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। হেফাজত ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ কয়েকজনের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে; হালকা জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। পুরো বিষয়ে উনারা বেশ পজিটিভ।’
তিনি বলেন, ‘মাদরাসায় যাওয়ার পর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও হেফাজত নেতাদের সঙ্গে পিবিআই কর্মকর্তাদের ইতিবাচক আলাপ হয়েছে। তিনি (জুনায়েদ বাবুনগরী) তদন্তের কাজে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন।’
Advertisement
এদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী জাগো নিউজকে বলেন, ‘পিবিআই থেকে যা জানতে চাওয়া হয়েছে সব প্রশ্নের জবাব হুজুর দিয়েছেন। এরপরও যদি তদন্তের সার্থে কোনো সহযোগিতা করতে হয়, তাহলে তা করা হবে।’
প্রসঙ্গত, কয়েক দশক ধরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার মুহতামিম বা মহাপরিচালকের পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন শাহ আহমদ শফী। এর মাঝেই আহমদ শফীর উত্তরসূরি হওয়ার দ্বন্দ্ব চলছিল মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম বা সহকারী পরিচালক জুনাইদ বাবুনগরী ও শফীর ছেলে আনাস মাদানীর মধ্যে।
এর জেরে গত ১৭ জুন সহকারী পরিচালকের পদ হারান বাবুনগরী। কিছুদিন পর মাদরাসার কার্যক্রম শুরু হলে ১৫ সেপ্টেম্বর আকস্মিকভাবে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ শুরু করে মাদরাসার মধ্যেই। এ সময় প্রধান ফটক আটকে মাদরাসার মধ্যে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ সেপ্টেম্বর মাদরাসার শুরা কমিটি বৈঠকে আনাস মাদানীকে মাদরাসার সহকারী পরিচালকসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। মুহতামিম আহমদ শফী নিজে ‘পদত্যাগ’ করেন। ওই দিনই গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শফীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
Advertisement
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। পরদিন ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মারা যান আহমদ শফী। তার মৃত্যুর পর গত ১৫ নভেম্বর হেফাজতের সম্মেলন হয়। শফীপন্থীদের অংশগ্রহণ ছাড়া অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে হেফাজতের আমির নির্বাচিত হন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
গত ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির মাওলানা শাহ আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে নালিশি মামলা করেন তার শ্যালক মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে নির্দেশ দেন।
আবু আজাদ/বিএ/এমকেএইচ