#১৩ সাক্ষীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা#পলাতক দুই আসামিও
Advertisement
১৮ বছর আগে রাজধানীর গুলশানে ইয়াবার প্রথম চালান উদ্ধার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় করা হয় মামলা। কিন্তু মামলাটির সাক্ষী না আসায় ঝুলে আছে বিচারিক কার্যক্রম।
মামলার ১৫ সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন দুজন। বাকি ১৩ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও বছরের পর বছর তারা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। এছাড়া মামলায় দুই আসামি পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও দুজনকে ধরা যায়নি।
১৮ বছর আগের ইয়াবার প্রথম মামলাটি বিভিন্ন আদালত ঘুরে বর্তমানে পরিবেশ আপিল বিভাগ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য রয়েছে।
Advertisement
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এ এফ এম রেজাউল করিম হিরণ জাগো নিউজকে বলেন, বিভিন্ন আদালত ঘুরে মামলাটি আমাদের আদালতে বিচারের জন্য পাঠানো হয়েছে। মামলাটি অনেক পুরোনো। মামলার ১৩ সাক্ষীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। অন্যদিকে মামলায় দুই আসামি পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত, মামলার সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো। এছাড়া পলাতক দুই আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ওয়ালিদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সাক্ষীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরও তাদের কেন গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হচ্ছে না তা খতিয়ে দেখা হবে। পলাতক দুই আসামিকে কেন এখনো গ্রেফতার করা হয়নি তাও খতিয়ে দেখা হবে।
যে ১৩ জন সাক্ষীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানাইয়াবার প্রথম মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ১৫ জনকে। এদের মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিদর্শক ফজলুর রহমান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন সাক্ষ্য দেন।
এরপর বাকি ১৩ জনকে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য বারবার আদালত থেকে সমন জারি করা হয়। সমন দেয়ার পরও হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তারা হলেন- মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তৎকালীন গুলশান জোনের পরিদর্শক ও মামলার বাদী এনামুল হক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর তৎকালীন গুলশান জোনের উপ-পরিচালক ড. আমিনুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, সহকারী পরিচালক আমজাত হোসেন, এএম হাফিজুর রহমান, জাহিদ হোসেন মোল্লা, প্রধান রাসায়নিক কর্মকর্তা দুলাল কৃষ্ণ সাহা, উপ-পরিদর্শক (এসআই) আহসান হাবিব ও সানোয়ার হোসেন।
Advertisement
এছাড়া আবু কাজী, নুরুজ্জামান, ফাহিম হাসান ও হেমায়েত নামে চারজন সাধারণ লোককেও সাক্ষী করা হয়।
প্রথম চালানে ১২ প্যাকেটে ১২০টি ইয়াবা ২০০২ সালের ১৮ ডিসেম্বর গুলশানের নিকেতনে প্রথম ইয়াবা (১২টি প্যাকেটে ১২০টি ডব্লিউ ওয়াই, যা পরে রাসায়নিক পরীক্ষার মাধ্যমে ইয়াবা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়) উদ্ধার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এসময় মাদক কারবারি সফিকুল ইসলাম ওরফে জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে রামপুরার বনশ্রী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই সহযোগী শামছুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় ১৯ ডিসেম্বর গুলশান থানায় মামলা করেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তৎকালীন পরিদর্শক এনামুল হক।
২০০৩ সালের ১৪ জানুয়ারি ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। চার্জশিটে সফিকুল ও তার তিন সহযোগী সোমনাথ সাহা, মোশফিক ও এমরান হকের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার বিষয় উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া সফিকুলের বাবা শামছুল ও ভাই শরিফুল মাদক কারবারে সহযোগিতা করে অপরাধ করেছেন বলেও চার্জশিটে বলা হয়। এদের মধ্যে সোমনাথ সাহা ও এমরান হক পলাতক।
জেএ/এসএইচএস/এইচএ/জেআইএম