বিশেষ প্রতিবেদন

প্যারিসে হামলা : কি ভাবছে মস্কো?

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সিরিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ের কৌশল পুনর্বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। প্যারিসে হামলার পর এই প্রথম বিশ্ব সামরিক জোট ন্যাটোর কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কথা বললো রাশিয়া।শুক্রবার সন্ধ্যায় প্যারিসের ছয়টি স্থানে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ১২৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরো অন্তত তিন শতাধিক। এ ঘটনায় সাত হামলাকারীও নিহত হয়েছে। এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।বিশ্বব্যাপী ব্যাপক নাড়া দেয়া এ ঘটনার পর সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে বিশ্বের দুই পরাশক্তি মস্কো এবং ওয়াশিংটনের সঙ্গে ন্যাটো জোট একসঙ্গে কাজ করবে কিনা সে বিষয়টিও এখন আলোচিত হচ্ছে।প্যারিসে আইএসের হত্যাযজ্ঞের পর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, বিশ্ব ক্রমান্বয়ে পরিবর্তন হচ্ছে, প্যারিসের এই ঘটনা নাড়া দিয়েছে। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াশিংটন ও ন্যাটো জোটের সঙ্গে প্রাধান্য পাওয়া বিষয়গুলোতে সম্ভবত সামান্য পরিবর্তন  আনতে হবে। তুরস্কে জি-২০ সম্মেলনের আগে রোববার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন বলে আইবি টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।তাহলে কি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই মেরুতে অবস্থানকারী দুই পরাশক্তি সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে নিজ দেশের প্রাধান্যকে ছাড় দিতে শুরু করলেন? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মনে।সিরিয়া ইস্যুতে ভিয়েনায় বিশ্বনেতাদের আলোচনা এবং প্যারিস হামলার পর বিশ্বব্যাপী যে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে এর মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন করে বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন লাভরভ।রাশিয়া এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গি ও অন্যান্য সশ্বস্ত্র বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে। এদের মধ্যে পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠীও মস্কোর হামলার লক্ষ্য। তবে সিরিয়ায় বাশার বিরোধীদের দমনে মস্কো অভিযান চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে ওয়াশিংটন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ক্ষমতায় থাকা নিয়ে বিশ্বের এ দুই পরাশক্তি পরস্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে। রাশিয়ায় যে কোনো মূল্যে আসাদকে ক্ষমতায় রাখতে চায় যেখানে পশ্চিমারা শিগরিরই আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পক্ষে।এদিকে চলতি সপ্তাহে তুরস্কের আনতালিয়ায় জি-২০ সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ইউরোপের অবস্থান ও ইউরোপে শরণার্থীদের বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।এসঅইএস/এএইচ/আরআইপি

Advertisement