দেশজুড়ে

গোপালগঞ্জে ভারতীয় নাগরিক অপহরণ

গোপালগঞ্জে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক ভারতীয় নাগরিককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।  শনিবার রাত ৯ টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ওমর মোল্লা (৬০) ও কুটি মিয়াকে (৫৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামের ওমর মোল্লার ছেলে আহাদ মোল্লা (২৮) অবৈধভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরের বড় বাজার এলাকায় চটের ব্যবসা করতো। সেখানে এক সন্তানের জননী বিধবা ছুটকি ওরফে রিয়ার (২৫) সঙ্গে আহাদ মোল্লার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চার মাস আগে ছেলেকে কলকাতায় রেখে আহাদের সঙ্গে ছুটকি গোপালগঞ্জের গোপীনাথপুর গ্রামে চলে আসেন। আহাদের বাড়িতে বসেই ছুটকি হালিমা নাম ধারণ করে আহাদকে বিয়ে করেন। তারপর থেকে তারা স্বামী স্ত্রী রূপে ঘর সংসার করছিলেন। কলকাতায় আহাদের ব্যবসায়ীক পার্টনার গোপীনাথপুর গ্রামের আব্দুল্লাহর সঙ্গে ৪ দিন আগে ছুটকির এক স্বজন তাকে ভারতে ফিরিয়ে নিতে গোপীনাথপুর গ্রামে আসে। তিনি ওই গ্রামের কুটি মিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ভারতীয় নারগরিককে অপহরণের পরিকল্পনা করা হয়। শনিবার রাত ৯ টার দিকে ওই গ্রামের শাহাবুদ্দিন মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া ও আলীম শরীফের নেতৃত্বে মুখোশপড়া আরো ২/৩ জন লোক নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে কুটি মিয়ার বাড়ি থেকে মারপিট করতে করতে টেনে হিচড়ে ওই ভারতীয় নাগরিককে অপহরণ করে। এ ঘটনার পর থেকে ছুটকি, তার স্বামী আহাদ ও আব্দুল্লাহ গা ঢাকা দিয়েছে। ওই ভারতীয় নাগরিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।আহাদের বাবা ওমর মোল্লা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ছোট ছেলে ইমদুল হক ও ৪ বছর আগে কলকাতা থেকে পূজা নামে এক মেয়েকে ভাগিয়ে এনে বিয়ে করেন। এখন তার নাম ফাতেমা । ৪ মাস আগে ছুটকিকে কলকাতা থেকে আমার বাড়িতে এনে আহাদ বিয়ে করে। ৪ দিন আগে ছুটকির এক স্বজন তাকে খুঁজতে আমাদের গ্রামে আসে। তিনি স্থানীয় একটি গ্রুপকে  টাকা পয়সা দিয়ে ঠিক করে ছুটকিকে ভারতে নিয়ে যেতে চান। এ নিয়ে গ্রামের মধ্যে দলাদলি সৃষ্টি হয়। এ দলাদলিকে কেন্দ্র করেই ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ওই ভারতীয় নাগরিককে অপহরণ করা হয়েছে।কুটি মিয়া জানান, ওই ভারতীয় নাগরিক আমার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলো। শনিবার রাত ৯টার দিকে আমার বাড়ি থেকে তাকে মারপিট করতে করতে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি জুয়েল ও আলীমকে চিনতে পারেন। অন্যরা মুখোশপড়া ছিলো বলে তিনি জানান। তিনিও ভারতীয় নাগরিকের নাম জানাতে পারেন নি।গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই হরিদাস মজুমদার বলেন, শনিবার রাত ১২টার দিকে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। তারপর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওমর ও কুটি মিয়াকে বাড়িতে নিয়ে আসি। অপহৃত ভারতীয় নাগরিকের নাম আমরা এখনো জানতে পারিনি। অপহরণকারী জুয়েল, আলীমসহ অন্যদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া ভারতীয় নাগরিককে উদ্ধারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ছুটকি, আহাদ বা আব্দুল্লাহও গা ঢাকা দিয়েছে। অপহরণকারীদের গ্রেফতার করতে পারলেই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে বৈধ না অবৈধভাবে এসেছে তা তিনি জানাতে পারেননি।এস এম হুমায়ূন কবীর/এমএএস/পিআর

Advertisement