স্বাস্থ্য

অকার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রতি পাঁচ মিনিটে ১ জন শিশুর অকাল মৃত্যু হচ্ছে। ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণরোধে জীবন রক্ষাকারীসহ বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের অবাধ ও অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জটিলব্যাধি যক্ষ্মা, এইচআইভি ও ম্যালেরিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধিতে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় ওষুধ রোগীর দেহে আগের মতো কাজ করছে না। ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচাইতে বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের অকার্যকারিতার বিষয়টি শুধু দক্ষিণ এশিয়াতে নয়, সারা বিশ্বের মানুষের জীবনের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে আগামীকাল (সোমবার) থেকে ‘বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ` (১৬ থেকে ২২ নভেম্বর) শুরু হচ্ছে। প্রথমবারের মতো আয়োজিত বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য- ‘অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সতর্ক হোন’।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. পূনম ক্ষেত্রপাল সিং বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সপ্তাহ উপলক্ষে এক বাণীতে বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অ্যান্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে পরামর্শ দিয়ে চলেছে।গত সেপ্টেম্বর মাসে তিমুর লেস্তের (পূর্ব তিমুর) রাজধানী দিলিতে ৬৮তম বার্ষিক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ১১টি দেশের অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ওষুধ অকার্যকর হয়ে পড়ছে। এ অবস্থাকে ‘অ্যান্টিবায়োটিক পূর্ব যুগ’-এর সঙ্গে তুলনা করে জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে ভুক্তভোগী দেশগুলোকে ওষুধের যথেচ্ছা ব্যবহার বন্ধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হওয়ার ফলে বর্তমানে আইসিইউতে সংক্রমণজনিত নিউমোনিয়া, মূত্রনালীর সংক্রমণ, ডায়রিয়া, গনোরিয়া, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়াসহ বিভিন্ন রোগের সুচিকিৎসা দুরূহ হয়ে পড়ছে। দিনকে দিন অ্যান্টিবায়োটিক রোগ প্রতিষেধকের বদলে রোগ প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছা ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব না হলে প্রতি বছর বিশ্বে এক কোটি মানুষের মৃত্যু হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহারে কোন নীতিমালা নেই। রাজধানীসহ সারাদেশের ছোট বড় ফার্মেসীতে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক অবাধে বিক্রি হচ্ছে। যে কোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে নির্দিষ্ট মেয়াদে, নির্দিষ্ট ডোজ, নির্দিষ্ট সময়ে সেবন করার নিয়ম থাকলেও তা অনুসরণ করা হচ্ছে না। ফলে ওষুধ অকার্যকর হয়ে পড়ছে।এমইউ/আরএস/পিআর

Advertisement