রাজশাহীর পুঠিয়ায় পলি খাতুন (২৩) ও তার পাঁচ মাসের শিশু কন্যা সুমাইয়া খাতুন ওরফে ফারিহা হত্যা মামলায় আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হলেন- নিহত পলি খাতুনের শ্বশুর হাসিব মণ্ডল (৫৫) ও শাশুড়ি চায়না বেগম (৪৮)।
Advertisement
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে উপজেলার গোপালহাটি ফকিরপাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুঠিয়া থানা পুলিশ। এর আগে নিহত পলির ভাই কাজল শেখ বাদি হয়ে পলির স্বামী ফিরোজ মণ্ডল (৩৫), শ্বশুর হাসিব মণ্ডল ও শাশুড়ি চায়না বেগমকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরের পর তাদের রাজশাহীর আমলী আদালত-৩ নেয়া হয়। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুঠিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খালেদুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Advertisement
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার (৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে নিজ বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন ফিরোজ। পরে মরদেহ ফেলে রাতেই ঢাকার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন। পিতার বর্বরতা থেকে প্রাণে বেঁচে যায় ঘুমন্ত আড়াই বছরের শিশু ফাহিম আলী। মা ও বোনের মরদেহের পাশে কান্নাকাটি করছিল শিশুটি।
খবর পেয়ে রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকার গাবতলী উৎসব সিনেমা হল এলাকা থেকে ডিএমপির দারুস সালাম থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয় ফিরোজ মণ্ডলকে।
চার বছর আগে পুঠিয়া পৌরসভার কৃষ্ণপুর পশ্চিমপাড়া মহল্লার জুলহাস আলীর মেয়ে পলি খাতুনের সঙ্গে ফিরোজ মণ্ডলের বিয়ে হয়। ফিরোজ মণ্ডল একসময় রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী এনপি এলিগেন্স পরিবহনের সুপারভাইজার ছিলেন।
দুর্ঘটনায় এক পা হারান তিনি। এরপর ইজিবাইক চালিয়ে সংসারের হাল ধরেন। একপর্যায়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। এ নিয়ে প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতেন ফিরোজ। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনেও মাদক ইস্যু রয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।
Advertisement
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এআরএ/এমএস