জাগো জবস

শখকে পেশা হিসেবে নিয়ে সফল মিতাশা

তানজিন রোবায়েত রোহান

Advertisement

মিতাশা রহমান খান। ইডেন মহিলা কলেজের সাইকোলজি বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করেছেন। ফ্যাশন হাউস ও হিজাব নিয়ে কাজ করছেন। এ ছাড়াও তার আরেকটি উদ্যোগের নাম ‘ফ্রেশ অ্যান্ড হেলদি’। বসুন্ধরা রেসিডেন্সিয়াল এরিয়ায় একটি শো-রুম রয়েছে। তিনি অনলাইনে ‘হিজাব শপ অনলাইন স্টোর’ নামে ফেসবুক পেজ থেকেও হিজাব বিক্রি করেন।

মিতাশার অনলাইন বিজনেসের যাত্রা শুরু ২০১৪ সালে। শুরুটা সহজ ছিল না। অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ার সময় শখের বশে অনলাইন বিজনেস শুরু করেন। তখন তার দাম্পত্য জীবনও শুরু হয়। পড়াশোনা এবং ঘরের কাজের ফাঁকে অবসরে কিছু করবেন ভেবে একটি ফেসবুক পেজ খোলেন। হাতে তৈরি কিছু কাজের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেন।

তার এ শখের বিজনেসে রীতিমতো সাড়া দেখে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। পরে এ শখের স্বপ্ন পেশা থেকে নেশা, ধ্যান-ধারণায় রূপ নেয়। তার উদ্যোগের নাম ‘ফ্রেশ অ্যান্ড হেলদি’। যেখানে তিনি বিভিন্ন জেলার ঐতিহ্যবাহী খাবার বিক্রি করেন।

Advertisement

তার জন্ম কুমিল্লায়। তাই নিজ জেলার বিখ্যাত রসমালাই দিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। তারপর আস্তে আস্তে বগুড়ার দই, সিরাজগঞ্জের ঘি, সুন্দরবনের মধু, ঘানি ভাঙা সরিষার তেল নিয়ে কাজ করেন। তার সাথে হাতে বানানো বালুসাই মিষ্টি তার সিগনেচার আইটেম।

তার আরেকটি উদ্যোগ হিজাব শপ অনলাইন স্টোর। যেখানে তিনি দেশীয় শাড়ি, হিজাব, জামা নিয়ে কাজ করেন। প্রথমদিকে অনলাইনে বিজনেস ভিত্তিক পেজ ছিল না। খুব সামান্য মূলধন নিয়ে পথচলা শুরু করেন। কিছু দিন যেতেই অনলাইন ভিত্তিক বিজনেসে দারুণ সাড়া পান। পরে কিছু প্রোডাক্ট যুক্ত করেন। অল্প দিনে অভাবনীয় সাফল্যের কারণে বিজনেসকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।

তারপর তার হাতে তৈরি প্রোডাক্টের পাশাপাশি উন্নতমানের কিছু প্রোডাক্ট ভারত থেকে ইনপুট করেন। বর্তমানে তার হিজাব স্টোরে হিজাব ছাড়াও নারীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, কাপড়, বোরকা, ওড়না, থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন প্রোডাক্টের সার্ভিস দিয়ে থাকেন।

পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি এ বিজনেসের সঙ্গে যুক্ত আছেন। তার এ সফলতার পেছনে তার স্বামী এবং পরিবারের সমর্থন, সহযোগিতা ছিল বলেই এতদূর আসতে পেরেছেন। বিশেষ কারণ হলো- তার প্রোডাক্ট ডেলিভারির ক্ষেত্রে গত ৫ মাস ধরে নিজেদের কুরিয়ারের মাধ্যমে সাপ্লাই দেন।

Advertisement

করোনাকালে যখন কুরিয়ার বন্ধ ছিল; তখন তার স্বামী একটি নিজস্ব কুরিয়ার কোম্পানি খোলেন। কুরিয়ার কোম্পানির নাম দেন ‘আমাদের এক্সপ্রেস’। এর মাধ্যমে তিনি ডেলিভারি করে থাকেন। এ ছাড়াও তার নিজস্ব শো-রুমে এসেও ভোক্তারা পণ্য কিনতে পারেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ব্যাপারে জানতে চাইলে মিতাশা বলেন, ‘আমার ইচ্ছা আছে, এর মাধ্যমে সবাই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বিখ্যাত খাবারগুলো পাবেন। ভবিষ্যতে ড্রাই ফুডগুলো এক্সপোর্ট করব। সে কাজ চলছে এখন। আশা করি, দেশের মাটি ছাড়িয়ে বাইরের দেশেও পৌঁছাবে আমার পণ্য।’

লেখক: শিক্ষার্থী, ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

এসইউ/এমএস