সাহিত্য

মাসুদ সুমনের একগুচ্ছ কবিতা

সন্ধ্যা এবং আমিক্লান্তি জড়ানো সন্ধ্যাগুলো ভীষণ বিব্রত বোধ করে। আলুথালু অন্ধকারে আমাকে কোথায় দাঁড়াতে দেবে ভেবে পায় না- চারিদিকে কলরবমুখর মানুষ; সেদিকে নজর দিতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের এড়িয়ে যাবার এখতিয়ার সন্ধ্যাদেরও নেই।সান্ধ্যকালীন নাগরিক রাস্তাগুলো যেন আন্তরিকভাবে লজ্জিত হয়ে বলে, ‘আপাতত খানিকটা ঘুরে আসুন।’ যেন সান্ত্বনাই দিতে চায়- ‘আমার বুকে অন্ধকার আরও গাঢ় হলে পুরোপুরি ফ্রি হয়ে যাব। সকলেরই ঘর আছে। ঘরে বায়না করা আশ্রয় আছে। ঘুরে আসুন। আপাতত বৃক্ষদের কাছে যেতে পারেন। তারাও ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। কিংবা নদী। সে-ও চলেছে একা একা। আপনার মতো।’আমি একাই জেগে রবোআমি একাই কচি লাউয়ের ডগার মতসাবলিল আন্তরিকতায় কথা বলে যাবোফুটফুটে জোছনার মত মেলে ধরবো প্রেমপুঁজে ভরা কুটিল দাঁড়িয়ে গেলে সারি সারিআমি একা হেঁটে যাবো বিশুদ্ধ সুন্দর;ভয়ংকর ভীরুতায় সকলের কণ্ঠ পুরোপুরি মিলিয়ে গেলেওআমি একাই উচ্চারণ করে যাবো দৃঢ়তর শব্দগুচ্ছমুখোমুখি-ভুলে যাওয়া ভালোপৃথিবীর বয়স বেড়ে চলেছে ক্রমশ সেই সাথে তোমার আমারহঠাৎ হঠাৎ পা ফসকে পেছনে চলে যায় ফেলে আসা দিন ফেলে আসা মুখ পড়ে আছে যে যেমন ছিল।পুকুরের ধারে বেড়ে ওঠা কুমড়োর ডাঁটা ছিঁড়তে এসে খুঁজেছিলে কারে- চোখে চোখেপুকুরের জলে পড়ে আছে ক্ষয়ে যাওয়া আমাদের ইতিহাসসেইসব আজ ভুলে যাওয়া ভালোনতুবা কষ্টটা বাড়ে।পোস্টমডার্নআলো খেকো ঘুটঘুটে গুহায় নিশ্চিন্ত আছি; য্যানো মৃত্যুরও অধিক নির্জনতার নির্যাস আহা! ঘুমঘুম গুম হতে থাকা হৃদয়! প্রজাপতির ফুটফটে ডানা থেকে সরে গেলে আলো রংহীন দ্যাখো কী সুন্দর! পৃথিবীতে পাপ বলে কিছু নেই আর; এমনই দুর্বোধ্যময় হয়ে উঠুক দৃশ্যগুলো- শরতের আকাশ থেকে সরে যাক সমুদ্রের ঢেউ, উড়ে যাক থোকা থোকা ঘ্রাণ।গলিত সন্ধ্যার মোড়ে এসে বিভ্রান্ত হয়ে পড়া অচিন কুকুর অযথাই জ্বলজ্বল চোখে চেয়ে থাকে; কাঁচা মাংসের স্বাদে নেচে উঠছে গর্ভবতী চাঁদ; এই ফাঁকে আমরাও বলতে পারি, ‘পানশালা বেশ জমে উঠুক মহাশয়!’এসইউ/এইচআর/এমএস

Advertisement