আন্তর্জাতিক

বালি দ্বীপের এ কী হাল!

ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের নাম শুনলেই চোখে ভাসে নীল জলরাশির পাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সৈকত, আর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য। কিন্তু ধূসর বালুর বদলে সেখানে পড়ে রয়েছে সারি সারি প্লাস্টিকের বোতল, ময়লা-আবর্জনা, এমন হতচ্ছিরি দৃশ্য কে দেখতে চায়? অথচ অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও সেটাই এখন বাস্তব। বিখ্যাত এ পর্যটন দ্বীপের সৈকতগুলোতে গত কয়েকদিন ধরে ভেসে আসছে লাখ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য।

Advertisement

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত শুক্র ও শনিবার কুটা, লেজিয়ান ও সেমিনিয়াক সৈকত থেকে অন্তত ৯০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

বাদুন এলাকার পরিবেশ বিষয়ক একটি সংস্থার কর্মী ওয়াইয়ান পুজা বলেন, সৈকতগুলো পরিষ্কার রাখতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। কিন্তু ময়লা আসতেই আছে। আমরা প্রতিদিন সেগুলো সংগ্রহ করতে ট্রাক-লোডার ও কর্মী নামাচ্ছি।

তিনি জানান, গত শুক্রবার বালির তিনটি সৈকত থেকে প্রায় ৩০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করেছেন তারা। কিন্তু শনিবার এর পরিমাণ বেড়ে যায় দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৬০ টনেরও বেশি।

Advertisement

সামুদ্রিক দূষণ রোধে ইন্দোনেশিয়ার সরকারের সঙ্গে কাজ করছেন অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞান সংস্থা সিএসআইআরও-এর মুখ্য গবেষক ড. ডেনিস হার্ডেস্টি। তিনি জানান, সম্প্রতি ইন্দোনেশীয় সৈকতগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর এই অবস্থা প্রতিবছরই ক্রমান্বয়ে খারাপের দিকে যাচ্ছে।

ড. ডেনিস বলেন, ময়লাগুলো বেশি দূর থেকে আসেনি। ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুঞ্জের অন্য সৈকতগুলোতেও এই দুরবস্থা থাকতে পারে।

বালি দ্বীপের সৈকতগুলোতে প্রতিবছরই মৌসুমি বৃষ্টিপাত এবং পূর্বমুখী বাতাসে আবর্জনা ভেসে আসে। ড. ডেনিসের মতে, বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে ভেসে আসা আবর্জনার পরিমাণও বাড়ছে।

এ পরিস্থিতির জন্য ইন্দোনেশীয় সরকারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতাকেও দায়ী করেছেন বালির উদয়ানা ইউনিভার্সিটির সমুদ্র বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রধান ড. গেদে হেন্দ্রওয়ান। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো- ইন্দোনেশিয়ায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যকর হয়নি। বালি ইতোমধ্যে এর পুনর্গঠন শুরু করেছে, জাভাও করছে।

Advertisement

প্রতিবছর এই সময়ে হাজার হাজার পর্যটক বালি দ্বীপ ভ্রমণে যান। তবে চলতি বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিদেশিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে ইন্দোনেশিয়া। শুধু দেশি পর্যটকরাই সীমিত সংখ্যায় এই দ্বীপে ঘুরতে যেতে পারছেন। তবে, এর কারণে দেশটির অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

কেএএ/এমএস