ভারতীয়দের নিজেদের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কোভ্যাক্সিন নিয়ে সমালোচনা মানতেই পারছে না এর নির্মাতা ভারত বায়োটেক। ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই ভ্যাকসিনটির অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ক্ষেপেছেন প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. কৃষ্ণ এল্লা। তার দাবি, অভিজ্ঞতাহীনতার অভিযোগ ওঠা ভারত বায়োটেক ভারতীয় নয়, বরং এটি একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানটি।
Advertisement
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভারত বায়োটেকের প্রধান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা কৃষ্ণ বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অভিজ্ঞতাহীনতার অভিযোগ তুলবেন না। আমরা অনেক ভ্যাকসিন তৈরি করেছি।
তিনি বলেন, এমন অভিযোগ তোলা ঠিক নয় যে, আমরা তথ্যের বিষয়ে স্বচ্ছ ছিলাম না। আমরা ১৬টির বেশি ভ্যাকসিন তৈরি করেছি। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলোতে ২০০ শতাংশ সৎ ছিলাম। এধরনের প্রতিক্রিয়া আমাদের মোটেও প্রাপ্য নয়।
ভারত বায়োটেকের এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালিয়েছি। মূল কথা হলো, আমরা ভারতীয় নই, আমরা একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান।
Advertisement
তিনি বলেন, বিশ্বের মধ্যে একমাত্র আমাদের কাছেই রয়েছে বিএসএল-৩ (জৈব সুরক্ষা পর্যায়-৩) উৎপাদন কারখানা। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও তা নেই। আমরা এখানে জনগণের জরুরি স্বাস্থ্য সেবায় সাহায্য করতে এসেছি।
ভারতীয় এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা অনেক জার্নাল প্রকাশ করেছি। আমরাই প্রথম জিকা ভাইরাস চিহ্নিত করি এবং বিশ্বের মধ্যে প্রথম জিকা ও চিকুনগুনিয়া ভ্যাকসিনের প্যাটেন্ট নিই। এটা বলা ঠিক না যে, আমরা তথ্যের বিষয়ে স্বচ্ছ নই। এর আগে, গত রোববার একই সঙ্গে দু’টি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয় ভারত। এর একটি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড, অপরটি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। অক্সফোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে কোভিশিল্ড উৎপাদন করছে পুনেভিত্তিক সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট। এটি নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য না হলেও কোভ্যাক্সিনের অনুমোদন নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। কারণ সেটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালই এখনও শেষ হয়নি, নেই সুরক্ষা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্যও।
বিভিন্ন মহলের দাবি, কোভ্যাক্সিনকে তড়িঘড়ি অনুমোদন দিয়ে একপ্রকারে বিপদ ডেকে আনছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে নানা কথা বলে মানুষকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা।
সর্বভারতীয় মেডিক্যাল সংস্থা এইমসের কর্মকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া বলেছেন, ভারতে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচিতে প্রথমে সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড ব্যবহার করা হবে। বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে কোভ্যাক্সিনকে। কোভিশিল্ড ব্যবহারের মধ্যেই কোভ্যাক্সিনের আরও তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
Advertisement
সূত্র: এনডিটিভি
কেএএ/এমএস