জাতীয়

প্রশিক্ষণের নামে সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়, নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ

প্রশিক্ষণের নামে সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়, নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ

নিজেদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছেন নির্বাচন কমিশনাররা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনাররা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা চান। এসব সুবিধার মধ্যে রয়েছে পেনশন, আজীবন পেনশন সুবিধা, আপ্যায়ন ও চিকিৎসা সুবিধা। তাদের দিতে হবে না কোনো আয়করও। এ জন্য বিদ্যমান এ-সংক্রান্ত আইন সংশোধনের জন্য খসড়া প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

Advertisement

অন্যদিকে প্রশিক্ষণের নামে প্রায় সাড়ে সাত কোটি (সাত কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার) টাকা ভাতা বৈধ করতে নীতিমালা পাল্টে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইসি। এ দুটি বিষয় ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি এজেন্ডাসহ আজ (রোববার) বিকেলে ৭৪তম সভা কমিশন বৈঠকে বসছেন তারা।

চলতি সংসদ ও পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় বিধিবহির্ভূতভাবে প্রশিক্ষণের নামে প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয় দেখায় ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার এবং ইসির কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ দেয়ার নামে ভাতা হিসেবে এত টাকা নেন। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এরপর এ বিষয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদফতরও। অনিয়ম ধরা পড়ার পর নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) সেই সময়ের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুককে ঢাকা থেকে বদলি করা হয়। তিনি এর মধ্যে কিছু টাকা ফেরতও দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বরং এখন আইন পরিবর্তন করে বিষয়টি বৈধ করার প্রক্রিয়া চলছে।

এ জন্য আজকের কমিশন বৈঠকে কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে ‘নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালনায় প্রশিক্ষণ ও বাজেট প্রমিতকরণ নীতিমালা, ২০২০’ নিয়ে আলোচনা শেষে অনুমোদন হতে পারে।

Advertisement

সভায় অনুমোদিত পদের বাইরে কোর্স উপদেষ্টা, বিশেষ বক্তা ও কোর্স পরিচালক- এই তিন ধরনের পদ রাখা এবং ওই পদের বক্তাদের বক্তৃতা ভাতা পরিশোধ নিয়ে আপত্তির বিষয়গুলো তোলা হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণে কোর্স উপদেষ্টা ও বিশেষ বক্তার পদ রাখা ও ভাতা দেয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত চেয়েছে ইসি সচিবালয়। কোর্স পরিচালককে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত হার থেকে বেশি ভাতা দেয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে একটি প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রতি দেড় ঘণ্টায় বক্তব্যে অতিথি বক্তার জন্য সাত হাজার টাকা ভাতা ধরা হয়েছে। প্রতি কোর্সের জন্য ‘কোর্স উপদেষ্টা’ আট হাজার টাকা, ‘কোর্স পরিচালক’ ছয় হাজার টাকা, সুপারভাইজিং প্রশিক্ষক ছয় হাজার টাকা ও মনিটরিং কর্মকর্তা পাঁচ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া প্রশিক্ষণ ভাতা নেয়ায় অডিট আপত্তি এসেছে। এ নিয়ে নীতিমালা সংশোধন করবে ইসি। এ জন্য খসড়া নীতিমালটি নিয়ে আজ বৈঠকে আলোচনা হবে।

এদিকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের বেতন, ভাতাদি, পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত আইন-২০২০’র খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে বিচারপতিরা পান না এমন সুবিধাও রাখা হয়েছে। যুক্ত হয়েছে পেনশন সুবিধাও। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী নিজ বাসভবনে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও দেশের ভেতর ভ্রমণে টিএ-ডিএসহ সব ভাতা চান। তবে মাসিক বেতন, অন্যান্য ভাতা চান উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের সমান। একইসঙ্গে তারা ঢাকার বাইরে ভ্রমণের সময় গাড়িতে জাতীয় পতাকা ও কমিশনের পতাকা ব্যবহার করতে চান। আজ এটিও চূড়ান্ত করতে পারে ইসি।

এইচএস/বিএ/জেআইএম

Advertisement