প্রকৃতির খেয়ালে বড় ধরনের জন্মগত ক্রুটি (দুই মাথা, দুই হৃদপিণ্ড ও দুই মেরুদণ্ড) নিয়ে জন্মগ্রহণ করা সেই হতভাগ্য শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিওনেটাল স্পেশাল বেবি কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন ওই নবজাতক তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছে। তার উভয় হৃদপিণ্ডে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়ায় শুক্রবার রাত থেকে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। শিশুটির জন্য ঢামেক নবজাতক বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবিদ হোসেন মোল্লাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়েছে। অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন; শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক কাজল, নিউরো সার্জারি বিভাউ ডা. রাজিউল ইসলাম, কার্ডিওলজি বিভাগের ডা. নুরুস সাবাহ ও নবজাতক শিশু বিভাগের ডা. শাহনুর ইসলাম। মেডিকেল বোর্ড প্রধান এই শিশুটির চিকিৎসার্থে গঠিত শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় জাগো নিউজকে জানান, বড় ধরনের জন্মগত ক্রুটি নিয়ে জন্ম নেয়া এই শিশুটির দুটো হৃদপিণ্ডে জটিল সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে তার তীব্র শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তিনি জানান, আজ (শনিবার) সকালে তার ইকো কার্ডিওগ্রাফিসহ প্রয়োজনীয় বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা শিশুটির প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করে ওষুধপত্র দিচ্ছেন। এ অবস্থায় শিশুটির সার্জারি করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, সার্জারি করেও শিশুটিকে আলাদা করা সম্ভব হবেনা। তার কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আলাদা থাকলেও- দুই হাত ও দুই পা একসঙ্গে রয়েছে। শিশুটির ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী হয় তা তারা নিজেরাও বুঝতে পারছেন না বলে জানান তিনি। হবিগঞ্জ জেলার ভবানিপুরের বাসিন্দা দরিদ্র কৃষক মো. জালালের সন্তানসম্ভবা স্ত্রী ফেরদৌস আরা বেগম গত বুধবার ডেলিভারি করাতে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হন। সেখানেই শিশুটির জন্ম হয়। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওই দম্পতি শিশুটিকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করান। শিশুটির দরিদ্র বাবা মা চিকিৎসক নার্সদের কাছে শিশুটি বাঁচবে কিনা জানতে চাইলেও কেউ নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারছেন না।এমইউ/এসএইচএস/আরআইপি
Advertisement