ময়মনসিংহের ত্রিশালে হত্যাকে কেন্দ্র করে বৃদ্ধ দম্পতিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে বাড়ি দখল করেছে প্রভাবশালীরা। দখলকৃত ওই জমিতেই নিহতের স্মরণে তৈরি করা হয়েছে মার্কেট। এখন ভিক্ষা করে দিনাতিপাত করছেন বসতভিটাহারা ওই বৃদ্ধ দম্পতি।
Advertisement
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের মধ্যভাটি পাড়া গ্রামে চান মিয়া হত্যাকে কেন্দ্র করে আতশ আলী ও তার স্ত্রী মগরজানসহ তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে বাড়িছাড়া করেন প্রভাবশালী সোহরাব আলী মন্ডলের ছেলে রফিকুল ইসলাম বাবুল।
ঘটনার ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও বসতভিটা দখল নিতে পারেননি বৃদ্ধ দম্পতি। হত্যাসহ দেয়া হয়েছে তাদের নামে তিনটি মামলা। বেদখলকৃত ১৯ শতাংশ জমিতে চান মিয়া স্মরণে মার্কেট নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন রফিকুল ইসলাম বাবুল।
ভুক্তভোগী বৃদ্ধ দম্পতি আতশ আলী ও মগরজান বেগম বলেন, স্বাধীনতার আগ থেকেই তারা মধ্যভাটিপাড়ায় ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে বসবাস করে আসছেন। এখানে থেকেই ছেলে মেয়েরা বড় হয়েছে। ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর গাছের ডাল পড়াকে কেন্দ্র করে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনের সাথে তাদের ঝগড়া হলে চান মিয়া মাঝখানে পড়ে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
Advertisement
সেই ইস্যুতে তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে হত্যা মামলাসহ তিনটি মামলা দিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করে উচ্ছেদ করেন রফিকুল ইসলাম বাবুলরা। এখন রফিকুল ইসলাম বাবুল গংদের হুমকিতে এলাকাতেও যেতে পারছেন না তারা। ঘর-বাড়ি ভাঙচুরের পর মার্কেট তৈরি করে ভাড়াও দেয়া হয়েছে। এখন তারা ভিক্ষা করে রাস্তায় ঘুমান।
স্থানীয় দেলোয়ার হোসেন ও আকবর আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আতশ আলীর পরিবার এখানে বসবাস করছেন। আতশ আলী একজন কাঠমিস্ত্রী। চান মিয়া হত্যাকে কেন্দ্র করে তাদের বাড়ি-ঘর বেদখল করেছেন রফিকুল ইসলাম বাবুল।
তবে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বাবুলের দাবি, তাদের জায়গাতে পূর্ব পুরুষরা আতশ আলীর পরিবারকে থাকতে দিয়েছিল। এখন তার চাচাত ভাইকে হত্যা করায় উচ্ছেদ করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সোহরাব হোসেন বলেন, বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ি ভাঙচুর ও মারপিটের একটি মামলা তদন্ত করছেন তিনি। হত্যাকে কেন্দ্র করেই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। হত্যা মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
Advertisement
ত্রিশাল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম বলেন, হত্যাকে কেন্দ্র করে বৃদ্ধ দম্পতিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার বিষয়টি তার জানা নেই। যদি ওই দম্পতি থানায় অভিযোগ করে তাহলে ব্যবস্থা নেয়ার হবে।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এফএ/এমএস