রাজধানীর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। কোথাও ফরম বিক্রি, জমা গ্রহণ ও যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। কোথাও বা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডেকে এনে লটারির মাধ্যমে ভর্তি নেয়া হচ্ছে।
Advertisement
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
তবে রাজধানীর নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির উপচে পড়া আবেদন থাকলেও মাঝারি কিংবা অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের তেমন আনাগোনা নেই বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, বছরের নভেম্বর থেকে ভর্তি কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ। আবেদন ফরম বিক্রি, জামা গ্রহণ, যাচাই-বাছাই, তালিকা প্রকাশ, লটারি ও ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি চলে। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে এ চিত্র কিছুটা পাল্টে গেছে। এবার সবার আগে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কিছুটা ভিন্ন পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হচ্ছে।
Advertisement
রাজধানীর স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত ২৩ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইন আবেদন কার্যক্রম চলবে। সে হিসেবে বুধবার বিকেল ৫টায় আবেদন কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা। এ প্রতিষ্ঠানের চারটি শাখায় দিবা ও প্রভাতী শিফটে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, এসব শ্রেণিতে প্রায় ৩ হাজার শূন্য আসনে ভর্তির জন্য ২৬ হাজারের বেশি অনলাইন আবেদন জমা হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়বে। ২৭ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদনপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা নেয়া হবে। আগামী ১২ থেকে ১৬ ও ১৭ এবং ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্লাসভিত্তিক আলাদাভাবে লটারি আয়োজন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
জানতে চাইলে আইডিয়ালের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বুধবার জাগো নিউজকে বলেন, আজ অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শেষ হবে। এরপর আবেদন জমা নেয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে যোগ্যদের তালিকা নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে ধাপে ধাপে ৬ দিন লটারি আয়োজন করে নির্বাচিতদের ভর্তি করা হবে।
তবে লটারি কার্যক্রমে সকল অভিভাবকদের উপস্থিত থাকতে দেয়া হবে বলেও জানান অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম।
Advertisement
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে অনলাইন কার্যক্রম শুরু হয়ে ২৬ ডিসেম্বর শেষ হয়। পরের দুইদিন আবেদনকারীদের কাছে হার্ডকপি জমা নেয়া হয়। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করে ৬ জানুয়ারি লটারির জন্য যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর লটারির সময় ঘোষণা করা হবে। এ প্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত শূন্য আসনের সংখ্যা ঘোষণা করা না হলেও প্রায় ১৭ হাজার ভর্তির আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।
এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুন নাহার বুধবার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে আমি যোগদান করব।’
যোগদানের পর নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তি কার্যক্রম শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম চলবে আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। তবে এ বিদ্যালয়ের প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অফিস থেকে ভর্তি ফরম বিক্রি করা হচ্ছে। ক্লাসভিত্তিক ৩০ জন করে ডেকে এনে লটারি আয়োজন করে ভর্তি করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাহাব উদ্দিন মোল্লা জাগো নিউজকে জানান, প্রতি বছর শূন্য আসনের বেশি আবেদন এলেও এবার শিক্ষার্থী সংকট রয়েছে। এখন পর্যন্ত শূন্য আসনের অর্ধেক ফরম বিক্রি হয়নি।
একই চিত্র রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মাঝারি ও ছোট আকারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নীতিমালা জারির পরে রাজধানীর স্কুলগুলোতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হলেও অনেক প্রতিষ্ঠানের ভর্তির জন্য ছাত্র-ছাত্রী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান শিক্ষকরা।
এমএইচএম/এসএস/এমএস