দীর্ঘ ১০ বছর ধরে অন্ধকার ঘরে বসবাস তাদের। তারা তিন ভাই-বোন। বয়স ৩০ থেকে ৪২ বছরের মধ্যে। তিনজনই শিক্ষিত। বড় ভাই এক সময় আইনজীবী ছিলেন। ছোট বোনের মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। সব থেকে ছোট ভাইটি ভাল ক্রিকেট খেলতেন। তিনিও স্নাতক শেষ করেছিলেন।
Advertisement
তাহলে তাদের তিনজনের এমন পরিণতি কেন হলো! কেন তারা সমাজের মূল স্রোত থেকে নিজেদের এভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখলেন? একদিন, দু'দিন নয়, পুরো ১০টা বছর ঘুটঘুটে অন্ধকার ঘরে বন্দি রয়েছেন তারা। এত বছরে তাদের তিনজনের মধ্যে একজনও ঘর থেকে একবারের জন্যও বের হননি।
এই ঘটনা ভারতের গুজরাটের রাজকোটের। ওই তিন ভাই-বোনের বাবা একজন সরকারি কর্মচারী। ১০ বছর আগে তার স্ত্রী মারা যায়। মা মারা যাওয়ার পর শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন তিন ভাই-বোন। সেই শোকের আবহ তারা কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
মা মারা যাওয়ার পর থেকেই তারা অদ্ভুতভাবে নিজেদের ঘুটঘুটে অন্ধকার ঘরে বন্দি করে রাখেন। শেষমেশ তাদের বাবা সম্প্রতি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় তিন সন্তানকে উদ্ধার করেছেন। দশ বছর ধরে তিনি বারবার ছেলেমেয়েদের ঘর থেকে বের করে আনার চেষ্টা করেও পারেননি। তাই প্রতিদিন ওই ঘরের বাইরেই খাবারের থালা রেখে যেতেন তিনি।
Advertisement
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের লোকজন জানিয়েছেন, দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তারা যে অবস্থা দেখেছিলেন তা বলার মতো নয়। ঘরের ভেতরে বাসি-পঁচা খাবার আর ময়লার দুর্গন্ধ, চারিদিকে খবরের কাগজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। তিন ভাই-বোনকে ঘর থেকে উদ্ধার করে চিকিত্সার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাদের মানসিক অবস্থা ভালো নয়। মাথার চুলে জট পাকিয়েছে, শরীরের বিভিন্ন অংশে কালি আর ধুলো-ময়লা বাসা বেঁধেছে। তারা যেন স্বাভাবিক জীবন ফিরে পান এখন সে চেষ্টাই করা হচ্ছে।
টিটিএন/জেআইএম