প্রয়াত পপসম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের বাগানবাড়িটি অবশেষে বিক্রি হয়ে গেছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত ‘নেভারল্যান্ড র্যাঞ্চ’ নামের বিশাল বাড়িটি সম্প্রতি ২ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারে কিনে নিয়েছেন তারই বন্ধু রন বার্কল।
Advertisement
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ২০১৫ সালে বাড়িটির দাম হাঁকা হয়েছিল ১০ কোটি ডলার। ২০১৭ সালে দাম হাঁকা হয়েছিল ৬ কোটি ৭ লাখ ডলার। ওই সময় থেকে এটি সম্পত্তির বাজারে তালিকাভুক্ত ছিল। গত বছরও এর দাম ছিল তিন কোটি ১০ লাখ ডলার। অবশেষে মাত্র ২ কোটি ২০ লাখ ডলারে এটি বিক্রি হলো।
দুই হাজার ৭০০ একর জায়গার উপর বাড়িটি নির্মিত। বিশাল এ বাড়িতে রয়েছে রেললাইন, অগ্নিসহায়তা কেন্দ্র ও বিস্তীর্ণ বাগান। মাইকেল জ্যাকসন এটি ১ কোটি ৯৫ লাখ ডলারে কিনেছিলেন। পরে জেএম ব্যারির পিটার প্যান গল্পে অনুপ্রাণিত হয়ে এটিকে শিশুদের বিনোদন কেন্দ্রে রূপ দেন তিনি। পাশাপাশি এখানে বসবাসও করতেন। কয়েক বছর আগে বাড়িটির নাম পাল্টে ‘সাইকামোর ভ্যালি র্যাঞ্চ’ রাখা হয়।
মূল ভবনে ৬টি শোয়ার ঘর, ৯টি বাথরুম, একটি বড় বেডরুম ও দুটি বড় টয়লেটসহ একটি চিলেকোঠা রয়েছে। ভেতরে লেক, সুইমিং পুলসহ খেলার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে একটি বিশাল থিয়েটার হল। ১৯৮২ সালে এ বাড়িটির স্থাপত্যশৈলীর নকশা করেছিলেন রবার্ট অলটেভার্স।মাইকেল জ্যাকসন বাড়িটিতে অবসরে একান্তে সময় কাটাতেন। এই বাড়িতেই তিনি শিশু যৌন নির্যাতন করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
Advertisement
‘লিভিং নেভারল্যান্ড’ নামের একটি তথ্যচিত্র প্রচারের পর মাইকেল জ্যাকসনকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। এটি একটি ব্রিটিশ-আমেরিকান ডকুমেন্টারি ফিল্ম। তথ্যচিত্রটি পরিচালনা করেছেন ব্রিটিশ চলচ্চিত্র নির্মাতা ড্যান রিড। এতে জ্যাকসনের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়।
২০১৯ সালে প্রচারিত ওই অনুষ্ঠানে দেখানো হয়, জেমস সেফচাক ও ওয়েড রবসন নামের দুজন সাক্ষাৎকারে দাবি করছেন, শিশু থাকাকালে মাইকেল জ্যাকসন তাদেরকে যৌন নির্যাতন করেছেন। তারা এখন ৩০ বছরের যুবক। তবে মাইকেল জ্যাকসনের পরিবার তাদের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এই তথ্যচিত্রের বিরুদ্ধে মাইকেল জ্যাকসনকে হেয় করার অভিযোগে ১০০ মিলিয়ন ডলারের মামলা করা হয়। মামলাটি করেছিল এমজে’র প্রতিনিধি মাইকেল জ্যাকসন স্টেট। অবশেষে সেই মামলায় জয় পায় তারা। চলতি বছরে করা এ মামলার বিবাদী এইচবিও নেটওয়ার্ক। গত ১৪ ডিসেম্বর আপিলের ৯ম সার্কিট প্যানেলের তিন বিচারকও নিম্ন আদালতের এই রায় বহল রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এর ফলে শিশু নির্যাতনের দায় থেকে মুক্ত হন মাইকেল জ্যাকসন।
১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত জ্যাকসনের বিরুদ্ধে শিশু যৌন নিপীড়নের অভিযোগের তদন্তের কেন্দ্র ছিল নেভারল্যান্ড র্যাঞ্চ। ২০০৫ সালে ওই মামলা থেকে খালাস পান মাইকেল জ্যাকসন। এ ঘটনার পর তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আর কখনো নেভারল্যান্ডে ফিরে যাবেন না।
Advertisement
২০০৯ সালে ৫০ বছর বয়সে অতিরিক্ত ওষুধ গ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পরই বিক্রির সিদ্ধান্ত হয় বিশাল এই বাড়িটি।
এমএসএইচ/এমএস