স্বাস্থ্য

বারডেমেই প্রতিদিন রেজিস্ট্রেশন করে ৮ শতাধিক ডায়াবেটিক রোগী

‘সকল রোগের জননী’ খ্যাত ডায়াবেটিস নিরব মহামারি ব্যাধি হিসেবে আর্বিভূত হচ্ছে। রাজধানীসহ সারাদেশের ধনী গরিব নির্বিশেষে এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। শুধুমাত্র রাজধানীতে ডায়াবেটিস চিকিৎসার বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান-বারডেম হাসপাতালেই বছরে তিন লক্ষাধিক অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ৮শ’ নতুন ডায়াবেটিকের রোগী রেজিস্ট্রেশন করছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির (বাডাস) মহাসচিব মো. সাইফ উদ্দিন।শুক্রবার জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বর্তমানে দেশে মোট ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা ৮৪ লাখ। বারডেমসহ বাডাসের বিভিন্ন অধিভুক্ত সমিতিতে রেজিস্টার্ড রোগীর সংখ্যা ৩০ লাখ। আশঙ্কাজনক তথ্য হলো ডায়াবেটিস রোগীর শতকরা ৫০ ভাগ রোগী জানেন না তারা এ রোগে আক্রান্ত। তিনি বলেন, ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতন না হলে ও তা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ডায়াবেটিক রোগীর কিডনি, চোখ, হৃদপিণ্ড ও পা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে শারীরিক জটিলতার প্রবল ঝুঁকি থাকে। যথাযথ চিকিৎসার অভাবে অসংখ্য লোক অন্ধত্ব ও পঙ্গুত্ব বরণ করা ছাড়াও অকাল মৃত্যুরও শিকার হচ্ছে।বর্তমানে দেশে যে হারে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এ হার অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সালে রোগীর সংখ্যা দেড় কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান তিনি। এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারাদেশে অব্যাহত নগরায়ন, পরিবর্তিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও কায়িক পরিশ্রমের অভাবে প্রায় সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে মোটা হওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। সাধারণত শরীর স্থুল হয়ে গেলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যায়। এ অবস্থায় ডায়াবেটিস ছাড়া শরীরে অন্যান্য জটিলতাও দেখা দেয়। তারা বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে সব কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে সচেতন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে শতকরা ৭০ ভাগ (টাইপ-২) ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। এমনই এক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আগামীকাল জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হবে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য-‘স্বাস্থ্যসন্মত খাবারই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে অন্যতম উপায়’। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার বারডেমে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাডাস সহ-সভাপতি মেজর জেনারেল (অব:) অধ্যাপক এ আর খান, মহাসচিব মো.সায়েফ উদ্দিন ও চি কো-অর্ডিনেটর ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ ও  পরিচালক প্রকাশনা  ও জনসংযোগ ফরিদ কবির প্রমুখ।বাডাস সহ-সভাপতি মেজর জেনারেল (অব:) অধ্যাপক এ আর খান বলেন, ডায়াবেটিস থেকে আগামী প্রজম্মকে রক্ষা করতে হলে স্বাস্থ্যসন্মত খাবারের প্রতি গুরত্ব দিতে হবে। অতিরিক্ত চর্বি ও ক্যালরিযুক্ত খাদ্য খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। অতিরিক্ত স্থুলতা ও ওজন শতকরা ৬০ ভাগ টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জন্য দায়ি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফাস্টফুড ও কোমল পানীয় পরিহারের পাশাপাশি সকলকে নিয়মিত ব্যায়ামের জন্য উৎসাহিত করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে বাডাস তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।এমইউ/এসকেডি/এমএস

Advertisement