জাতীয়

‘আম্ফানের পর উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়েছে শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ে’

‘সুপার সাইক্লোন আম্ফান পরবর্তী সময়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ে বেড়েছে। আম্ফানের কারণে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। উপার্জন কমে যাওয়ায় দূর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে পুষ্টিহীনতা বাড়ছে। কাজের সন্ধানে মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। একই কারণে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম বাড়ছে।’ একটি অনলাইন সংলাপে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।

Advertisement

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ৭ মাস : কেমন আছে উপকূলবাসী’ শীর্ষক সংলাপটি সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক আশীষ কুমার দে। আলোচনায় অংশ নেন খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু, দাতা সংস্থা ‘কে এন এইচ জার্মানি’র ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর মাটিলদা টিনা বৈদ্য, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, উন্নয়ন সংস্থা ফেইথ ইন অ্যাকশনের নৃপেন বৈদ্য এবং ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়রা উপজেলার মোসা. মহাসিনা বেগম।

সংলাপে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে সরকারের ত্রাণ কার্যক্রম ও উন্নয়ন পরিকল্পনার তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে টেকসই ও স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণে ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে দ্রুতই এসব প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

Advertisement

তিনি আরো বলেন, ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন শিল্পকারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনসহ আশপাশের এলাকায় পর্যটন ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রকল্প প্রণয়নের কাজ চলছে। যার মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক ব্যাধি দূর করতে সরকার কাজ করছে।

কে এন এইচ জার্মানির প্রতিনিধি মাটিলদা টিনা বৈদ্য বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উপকূলের জীবন জীবিকার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এতে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। উপার্জন কমে যাওয়ায় দূর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে পুষ্টিহীনতা বাড়ছে। কাজের সন্ধানে মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। একই কারণে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম বাড়ছে। প্রাকৃতিক জলাধার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সুপেয় পানির সংকট বেড়েছে। এসব সংকট মোকাবেলায় সরকারের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে বেসরকারী সংস্থাগুলোও কাজ করবে।

বিস্তীর্ণ উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষাসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠনের আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। ফলে ঝুঁকি বাড়ছে এই অঞ্চলের প্রাণ ও প্রকৃতির। নারী ও শিশুরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন। তারা সকলেই আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করছেন। উপকূলের জনগণের নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তারা।

এইচএস/এমএইচআর/এমকেএইচ

Advertisement