জাতীয়

বিমানবন্দরে নেগেটিভ সনদ ছাড়া যাত্রী প্রায় শূন্যের কোটায়

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের (সেকেন্ড ওয়েভ) সংক্রমণ ঠেকাতে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষসহ (বেবিচক) সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া বিদেশ থেকে আগত যাত্রী সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীদের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে গত ৫ ডিসেম্বর নির্দেশনা জারি করে বেবিচক।

Advertisement

এতে বলা হয়, দেশি-বিদেশি কোনো ফ্লাইটেই আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করানো করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া যাত্রী পরিবহন করতে পারবে না। নির্দেশনা অমান্য করায় রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ একাধিক দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইন্স ও এর যাত্রীদের আর্থিক জরিমানা করেন বিমানবন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বমোট ৬২ হাজার ৬৪৪ জন যাত্রী বাংলাদেশে এসেছেন। তাদের মধ্যে এক হাজার ৮২১ জন যাত্রী আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরির করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া চলে আসেন। কেউ কেউ আবার এন্টিজেন টেস্টে করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া আবার কেউবা করোনা পজিটিভে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও চলে আসেন। সনদ ছাড়া যারা এসেছেন তাদেরকে সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি ও আশকোনা হজ ক্যাম্পে স্থাপিত কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে এবং পজিটিভ রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আন্তর্জাতিক রুটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৬৪৪ জন (৫ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত) এবং কোয়ারেন্টাইনে থাকা রোগীর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে তিন হাজার ৮৭৩ জন (৩০৪ জন কোয়োরেন্টাইন), দুই হাজার ৯৫৭ জন (কোয়োরেন্টাইন ১৯৫ জন), তিন হাজার ২২৩ জন (কোয়োরেন্টাইন ২৩৫ জন) তিন হাজার ৫ জন (কোয়োরেন্টাইন ৮০ জন), তিন হাজার ৫১৯ জন (কোয়োরেন্টাইন ৪৮ জন), পাঁচ হাজার ৭৩৬ জন (কোয়োরেন্টাইন ১১৮ জন), তিন হাজার ৮৪৭ জন (কোয়োরেন্টাইন ৩০ জন), চার হাজার ১৩৫ জন (কোয়োরেন্টাইন ২৩ জন), তিন হাজার ৮৮১ জন (কোয়োরেন্টাইন চার জন), চার হাজার ৫০ জন (কোয়োরেন্টাইন ২৬৫ জন), চার হাজার ২৭৯ জন( কোয়োরেন্টাইন একজন), চার হাজার ৩৭৩ জন (কোয়োরেন্টাইন ৪১৬ জন)।

Advertisement

সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় (২০ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে ২১ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত) ২৭টি ফ্লাইটে মোট চার হাজার ৩১৩ জন দেশে ফেরেন। ২৭টি ফ্লাইটের মাত্র একটি ফ্লাইটে (এসবি৩৮৮৪) মাত্র একজন করোনা পজিটভ রোগী আসেন। তাকে আশকোনায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়।

করোনার আরটি পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া কিংবা করোনা পজিটিভ যাত্রী নিয়ে আসাসহ বিভিন্ন কারণে যেসকল এয়ারলাইন্সকে জরিমানা করা হয় তাদের মধ্যে মালদিভিয়ান এয়াইলাইন্সকে ২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, এয়ার এশিয়াকে এক লাখ টাকা, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে ৩০ হাজার টাকা, সৌদি এয়ারলাইন্সকে দুই লাখ টাকা এবং ইতিহাদকে এয়ারওয়েজকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘বেবিচকসহ বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার ব্যাপক তৎপরতা ও কঠোরতার ফলে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স আরটি পিসিআর ল্যাবরেটরিতে করা করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া যাত্রী পরিবহন করছে না। শুরুর দিকে কোনো কোনো ফ্লাইট সর্বোচ্চ তিন শতাধিক সনদ ছাড়া যাত্রী পরিবহন করলেও বর্তমানে তা এক দুইজনে নেমে এসেছে।

এমইউ/ইএ/জেআইএম

Advertisement