ফিচার

সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে হলিডে মিশন

সৌরভ শাহরিয়ার

Advertisement

সমাজে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সংখ্যা কম নয়; আবার তাদের কল্যাণে কাজ করার মত মানসিকতা নিয়ে বেড়ে ওঠা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে সমাজকে এগিয়ে নিতে অনেকেই এগিয়ে আসছেন। সমাজ উন্নয়নে তরুণদের সাথে তালমিলিয়ে তরুণীরাও পিছিয়ে নেই।

‘বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,/অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’- কবি নজরুলের এ কথার সার্থকতা প্রমাণ করতেই যেন কাজ করে চলেছেন লক্ষ্মীপুরের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস। জন্ম লক্ষ্মীপুরে হলেও তার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। বড় হয়ে র্যাব হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন।

মফস্বলে বেড়ে ওঠা আট-দশ জন মেয়ের মত জান্নাতুল ফেরদৌসের গল্পটাও একদম সাধারণ। ২০১৪ সালে কুরবানির ৭ দিন আগে তার বাবা যখন ঈদ শপিংয়ের টাকা দেন; তখন তার মনে হয় এখান থেকে অন্তত কিছু টাকা দিলেও দুটি পথশিশুর মুখে হাসি ফোটানো যাবে।

Advertisement

সেদিন থেকেই সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে পথচলা শুরু। তিনি মনে করেন, কাউকে বারবার সাহায্য করার চেয়ে একবারই সাহায্য করা উচিত। তখন থেকেই হলিডে মিশন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে গ্রুপের সদস্য। এগিয়ে যেতে থাকে সংগঠনটি।

২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নানা সমাজসেবামূলক কাজ করেছে হলিডে মিশন। যারমধ্যে উল্লেখযোগ্য- ঈদবস্ত্র, ত্রাণ ও শীতবস্ত্র বিতরণ। এ ছাড়া এতিমখানা, বাসস্থান, মসজিদ তৈরি করা। অসহায়দের রিকশা, সেলাই মেশিন, ভ্যান, চায়ের দোকান অনুদান।

এমনকি প্রতিবন্ধিদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি, মাদকাসক্তদের চিকিৎসা, চক্ষু অপারেশন, বিভিন্না চিকিৎসায় অনুদান, এতিম ও পথশিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা, শিক্ষা ক্ষেত্রে সাহায্য করা হয়।

সংগঠনটি ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, জামালপুর, শেরপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, গাজীপুর, কুমিল্লা, ফেনী, বরিশাল প্রভৃতি জেলায় সমাজসেবামূলক কাজগুলো করেছে।

Advertisement

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘এক রোজার ঈদে বাচ্চাদের জন্য শপিং করে ইফতার শেষে বের হতেই খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই তাড়াহুড়া করে গাড়িতে উঠে যাই। কিছুক্ষণ পর মনে পড়ে, সেখানে একটি বাচ্চা খালি গায়ে কাঁপছিল। অথচ তার জন্য কিছু করা হলো না।’

তিনি বলেন, ‘অবশ্য গ্রুপের সদস্যদের জানানোর পর সেখানে যাওয়া হয়। কিন্তু তাকে আর সেখানে পাওয়া যায়নি। সেই ঘটনা আজও আমার মনে কষ্ট দেয়।’

লেখক: ফিচার লেখক।

এসইউ/জেআইএম