রাজনীতি

নিজেকে মজলুম দাবি করলেন বাবর

শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর আদালতে  নিজেকে মজলুম ও এই হত্যা মামলার সঙ্গে তার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন। এ সময় বাবর শাহ এএসএম কিবরিয়ার সহধর্মিণী সদ্যপ্রয়াত আসমা কিবরিয়ার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন বলেও তার আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার অন্যতম আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর পূর্ব নির্ধারিত ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতির শুনানিকালে আসামির কাঠগড়ায় থাকা বাবর আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলার ফাঁকে এ দাবি করেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে লুৎফুজ্জামান বাবরের কথা বলার কথা জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. কিশোর কুমার কর বলেন, দীর্ঘদিন কারাগারের থাকার কারণে কয়েদিদের অনেক কথাই মনের মধ্যে জমে থাকে। তাই সে কিছু বললে মন ভালো হবে, এটা ভেবে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়।তিনি আরো বলেন, তবে বাবর কি বলেছেন সেটা আমি নিজেও শুনিনি। আর আসামি যাই বলুক তার কথায় কিছু হবে না। আইন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই পরিচালিত হবে।সাক্ষী না আসায় বৃহস্পতিবার সাক্ষ্যগ্রহণ না হলেও সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.মকবুল আহসান দীর্ঘ শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষের কাছে লুৎফুজ্জামান বাবরের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন চেয়েছেন। প্রতিবেদন পওায়ার পর ট্রাইব্যুনাল লুৎফুজ্জামান বাবরের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতির আদেশ দেয়া হবে আদালত জানিয়েছেন। লুৎফুজ্জামান বাবর বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে আছেন। এর আগে ট্রাইব্যুনালে লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী পারভেজ হোসেন ও বাবর নিজে ট্রাইব্যুনালের বিচারকের কাছে নিজের শারীরিক অসুস্থতার জন্য ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। এ সময় লুৎফুজ্জামান বাবর নিজেকে মজলুম ও এই হত্যা মামলার সঙ্গে তার বিন্দু মাত্র সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন। লুৎফুজ্জামান বাবর আদালতকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে তিনি এ্যাজমাসহ নানা জটিল ও কঠিন রোগে ভুগছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন থাকায় প্রায়শই তাকে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। যার কারণে তার শারিরিক অবস্থার ক্রমশ অবনিতির দিকে এগুচ্ছে। এ সময় তিনি শাহ এএমএস কিবরিয়ার প্রতিশ্রদ্ধা রেখে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। ট্রাইব্যুনাল তার বক্তব্য শুনার পর আগামী ১৮, ১৯ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষকে শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।ট্রাইব্যুনালে লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী ছাড়াও সিসিক বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধূুরীর আইনজীবী অ্যাড. মো. লালাসহ সকল আসামিদের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। সরকার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করছেন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. কিশোর কুমার কর।    প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। ওই হামলায় নিহত হন কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।তিন দফা তদন্তের পর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা পারুল ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর আরিফুল, গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে মোট ৩২ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল­াহ মামলাটি বিচারের জন্য গত ১১ জুন সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন।ছামির মাহমুদ/এআরএ/পিআর

Advertisement