ক্লান্তি যাচাই করার জন্য প্রফেসর ডা. ইয়র্গ স্পিটস এর ৪টি প্রশ্ন রয়েছে। চলুন সেগুলোর উত্তর দিয়ে জেনে নিন আপনি ক্লান্ত কি না? আপনি কি প্রায়ই ক্লান্ত বোধ করেন, কোনো কিছুতেই আগ্রহ বা উৎসাহ নেই? প্রায়ই কি আপনার মেজাজ খারাপ থাকে? সহজেই সর্দি-কাশি বা সংক্রমণে আক্রান্ত হন? দিনের বেশিরভাগ সময় কি বন্ধ ঘরে থাকেন? মাত্র দুটি প্রশ্নতে উত্তর যদি হ্যাঁ আসে বুঝতে হবে আপনি ক্লান্ত আর শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি রয়েছে।ক্লান্তির সাধারণ কারণঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হওয়া, খুব কম খাওয়া, পানিশূন্যতা, দীর্ঘমেয়াদী রোগ, ঘন ঘন জ্বরে আক্রান্ত হওয়া, ডাইবেটিস, উদ্বেগ, বিশ্রাম হীনতা।ক্লান্তি কাটিয়ে উঠার টিপস১. লৌহ ঘাটতি হয়ে রক্তস্বল্পতা হলে লৌহ পরিপূরক ওষুধ, কচু শাক, লাল শাক, তেল দিয়ে ভেজে খেলে ভালো। আপনি জানেন, খাবার শরীরে শক্তি যোগায় । শরীর প্রতিনিয়ত এই খাবার ব্যবহার করে। এমনকি হৃদপিণ্ডের মাধ্যমে রাতভর রক্ত পাম্প করা ও অক্সিজেন সরবরাহ করার মধ্য দিয়ে ঘুমানোর সময়ও রাতের খাবারকে কাজে লাগায় শরীর।২. ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তার মাধ্যমে শরীরকে পুনরায় শক্তি যোগানোর দরকার পড়ে। তাই যারা নিয়মিত সকালে নাস্তা করেন না, তাদের শরীর দ্রুত নিষ্ক্রিয়, দুর্বল হয়ে পড়ে। কাজেই শরীর সুস্থ ও ক্লান্তিহীন রাখতে সকালের নাস্তায় পর্যাপ্ত শর্করা, আমিষ ও স্বাস্থ্যসম্মত ফ্যাট নিশ্চিত করা জরুরি।৩. ব্যায়াম করুন বা ডেস্কে কাজ করুন, শরীরে পানি চাই, শরীর শীতল থাকা চাই। পিপাসা পেলে বোঝা গেলো পানির প্রয়োজন শরীরের।৪. টেক্সাস হেলথ বেন হোগান স্পোর্টস মেডিসিনের ডায়াটিশিয়ান এমি গুডসন বলেন, পানিশূন্যতা রক্তের আয়তন কমিয়ে দেয়, ফলে পানির অভাবে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। এতে হৃদপিন্ড কার্যকরভাবে রক্ত পাম্প করতে পারেনা, ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছানো গতি কমে যায়। কাজেই আপনার ওজন অনুযায়ী কী পরিমাণ পানি বা তরলের চাহিদা রয়েছে তা জেনে নিন এবং সমপরিমান পানি পান করে নিজেকে সুস্থ রাখুন।৫. বিশ্রামের সময় দিনের আলোর মুখোমুখি যত কম হওয়া যায় তত ভাল। দেখবেন সতেজতা ফিরে পেয়েছেন সহজে। ব্যস্ত জীবনে আবেগগত নানা গণ্ডগোল দেখা দেয়। অনেকেই নেতিবাচক মানসিকতায় ভুগে থাকেন। আর এ সমস্যা দূর করার জন্য প্রয়োজন নির্জনতায় বসে প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য উপভোগ করুন।৬. খাদ্য তালিকায় ডিম, দুধ, মাছের মতো ভিটামিন ডি-যুক্ত সবকিছু থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি। পাশাপাশি প্রয়োজন অনুযায়ী ভোরের সূর্যের তাপ গ্রহণ করুন। নিয়মিত দেখুন ভোরের আলো।৭. হয়ে উঠুন আত্মসচেতন। আত্মসচেতনতা তৈরির সময় এখন অনেকেই পান না। ছুটির দিনটিকে নিজের মতই উপভোগ করুন। সত্যিকার অর্থেই আপনি যখন ছুটি নেবেন, পরবর্তিতে কাজ শুরু করার পর আপনি হয়ে উঠবেন আরো বেশি সৃজনশীল, উৎপাদনক্ষম, উদ্যমী।৮.প্রিয়জনকে সময় দিন। সপ্তাহের অন্তত একটি দিন শখের চর্চা করুন। অতীতের যে স্মৃতি কষ্ট দেয় তাকে বিদায় জানাতে নিজেকে বিচার করুন। নিয়মিত শরীরচর্চা শক্তি ও উদ্যম বাড়ায়, কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেমকে অধিকতর কার্যকরী করতে সাহায্য করে এবং টিস্যুগুলোকে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ করে। কাজেই পরবর্তিতে যখনই বসে কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন, একটু হেঁটে আসুন। ক্লান্তি কাটবে সে কথা বলা যায় অনায়াশে।৯. অগ্রিম উদ্বেগ আপনাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে। কাজেই যখনই এরকম চিন্তা মাথায় চেপে বসবে, গভীরভাবে শ্বাস নিন, এবং ভাবুন সবচেয়ে খারাপ কী ঘটতে পারে। বন্ধু কিংবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কারো সাথে বিষয়টি শেয়ার করতে পারেন। ক্লান্তি আপনার ধারে কাছে খুব বেশী দাঁড়াতে পারবে না।১০. নিজের বাস্তব লক্ষ্যকে সময়সীমা বেঁধে দিন। কাজের প্রতি যত্নবান হউন। এর ফলে আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন যে অতিরিক্ত সময় ও শ্রম আপনি অযথা নষ্ট করছেন না, ক্লান্তও হচ্ছেন না।
Advertisement