আইন-আদালত

করোনার পিক টাইমে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে বিচার বিভাগ: আইনমন্ত্রী

করোনাভাইরাসের পিক টাইমেও বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

Advertisement

শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ প্রধান অতিথি ছিলেন।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর পিক টাইমে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। এ সময় বিচারকগণ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনা করে কঠিন দুঃসময়েও দেশে বিচারকাজ চালু রেখেছেন যা সারা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। এর মাধ্যমে গোটা বিচার বিভাগের দক্ষতা ও সক্ষমতারও পরিচয় ফুঠে উঠেছে। বিচার বিভাগের আজকের অবস্থানের পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানও অনস্বীকার্য।’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের বিগত ৪৮ বছরের পথচলায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বহু উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। দেরিতে হলেও ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জেলহত্যা মামলার বিচার এবং ১৯৭১-এর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের অবদান ভুলবার নয়।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘দেশে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল তা থেকে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে এসব হত্যাকাণ্ডের বিচারের কথা জাতি আজীবন স্মরণ রাখবেন। সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী বাতিলের রায় একদিকে যেমন বন্দুকের নলের মাধ্যমে অবৈধ ও অগণতান্ত্রিকভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলকারীদের বারিত করেছে অন্যদিকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করেছে।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি আজকের বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সম্পূর্ণ স্বাধীন কিন্তু এ অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য যে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছিল তা স্মরণ না করলে ভবিষ্যত পথ চলায় ভ্রান্তি হতে পারে। স্মরণ রাখতে হবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর দীর্ঘ ২১ বছর একটি মামলা পর্যন্ত রুজু হয়নি। বরঞ্চ এই হত্যাকাণ্ডের বিচার যাতে না হয় সেজন্য একটি ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে বহুবার এই কোর্টে এসেছেন। কিন্তু তার ক্ষেত্রে বিচারের বাণী নিভৃতে কেঁদেছে। তিনি তার পরিবারের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে পারেননি।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এক অদৃশ্য অপশক্তির ভয়ে তখনকার কোর্টগুলো এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। পিতার হত্যাকাণ্ডের বিচার পাওয়ার জন্য তাকে সরকারে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। আবার তিনি ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর সব আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিচারিক আদালতে এই হত্যাকাণ্ডের রায় হলেও তিনি যখন ক্ষমতা থেকে চলে যান তখন সেই অদৃশ্য অপশক্তির প্রচেষ্টায় হাইকোর্টে আবারও এই মামলার বিচার কাজ থেমে যায়। আজ দৃঢ়ভাবে বলতে পারি সেই অবস্থাকে পেছনে ফেলে আজকের সুপ্রিম কোর্ট একটি সুদৃঢ় অবস্থানে পোঁছেছে।’

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বক্তব্য দেন।

Advertisement

এফএইচ/এমআরআর/জেআইএম