গত চার দশক ধরে দেশে রফতানির প্রধান খাত ‘তৈরি পোশাক শিল্প খাত’ আবারও প্রমাণ করেছে যে, তারা সরকারের প্রণোদনা নির্ভর। সরকারের কাছে চাপ প্রয়োগ করে প্রণোদনা আদায়ের বিষয়টি দেখে মনে হয়েছে, ভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেন শুধু পোশাক খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই প্রণোদনার ফলে সরকার ও জনগণের ওপর এর প্রভাব আসে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। ‘তৈরি পোশাক খাতে করোনা ভাইরাস উদ্ভূত সংকট: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে টিআইবি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের কাছ থেকে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে পোশাক মালিক সমিতি প্রণোদনা আদায় করতে পারলেও শ্রমিকের অধিকার তারা নিশ্চিত করতে পারেনি। করোনা উদ্ভূত সংকটকালে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি ও ভাতা প্রদান না করা, বিদ্যমান আইন ভঙ্গ করে মালিক কর্তৃক কারখানা লে-অফ ঘোষণা ও শ্রমিক ছাঁটাই এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত না করা সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ পোশাক খাতে সুশাসনের ঘাটতি আরও ঘনীভূত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মালিকের ব্যবসায়িক স্বার্থে প্রতিনিয়ত তারা কারখানা লে-অফ করছেন। এতে চাকরি হারাচ্ছেন হাজার হাজার শ্রমিক। এ করোনা মহামারি বিবেচনায় নিয়ে সকল শ্রেণির শ্রমিকের চাকরির নিরাপত্তার বিধান সংযুক্ত করে শ্রম আইন, ২০০৬-এর ধারা ১৬ এবং ধারা ২০ সংশোধন করতে হবে। পাশাপাশি পোশাক খাতের উন্নয়নে করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ মোকাবেলায় সরকার ও মালিক সংগঠনগুলো কর্তৃক গঠিত বিভিন্ন কমিটিকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ও যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে এসব কমিটি শ্রমিকদের অধিকার ও কারখানায় তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।’
Advertisement
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘প্রাথমিক দুর্যোগ কাটিয়ে উঠে তৈরি পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়ানোর অবস্থায় বাংলাদেশে করোনা সংকটের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে করোনা সংকটের সময়ে এই খাতে কী ধরনের সুশাসনের চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান এবং কীভাবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হচ্ছে তা নিরূপণ করা এই খাতে ভবিষ্যতের সংকট মোকাবিলার জন্য জরুরি।’
ইএআর/এসএস/এমকেএইচ