ক্যাম্পাস

করোনায় উচ্ছ্বাসহীন ক্যাম্পাস, বিবর্ণ রাজু ভাস্কর্য

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত ঝুঁকি প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুসারে গত ১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে সদামুখরিত থাকত যে ক্যাম্পাস, সে ক্যাম্পাস এখন উচ্ছ্বাসহীন।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্পট- রাজু ভাস্কর্য, টিএসসি, ডাস চত্বর, মল চত্বর, হাকিম চত্বর, মিলন চত্বর, ভিসি চত্বর, দোয়েল চত্বর ও সমাজবিজ্ঞান চত্বরে এখন একসঙ্গে বেশি মানুষের দেখা মেলে না।

দেশে করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখে। বহিরাগতদের প্রবেশে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। করোনার কারণে শিক্ষাকার্যক্রমসহ বিভিন্ন সংগঠনের সবধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাসজুড়েই এখন নীরবতা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকলের অতিপরিচিত টিএসসি সংলগ্ন সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য চত্বর। যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রাম কিংবা দাবি আদায়ে এ চত্বরটি আন্দোলনকারীদের সাহস জুগিয়েছে। বর্তমানে মহামারি করোনার কারণে অযত্ন-অবহেলায় চত্বরটি শ্রীহীন হয়ে পড়েছে। চত্বরের চৌহদ্দিতে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমেছে। ভাস্কর্যগুলোতেও ধুলাবালি পড়ে ধূসর আকার ধারণ করেছে।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজু ভাস্কর্য চত্বরে দিনভর ভবঘুরে ও নেশাগ্রস্ত কিছু মানুষের আনাগোনা চলে। তারা এখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করে। ভাস্কর্যের চৌহদ্দি ঘিরে থাকা রেলিংয়ে ময়লা-আবর্জনাযুক্ত শাড়ি ও লুঙ্গি শুকাতে দেয়। কুকুর-বেড়ালও ঘুরে বেড়ায় দিনভর। করোনা পরিস্থিতিতেও যারা টিএসসিতে ঘুরতে আসেন তারা রাজু ভাস্কর্য চত্বরের বেহালদশা দেখে দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন।

উল্লেখ্য, রাজু ভাস্কর্যটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস তথা রাজধানীর অন্যতম প্রধান ভাস্কর্য নিদর্শন। ১৯৯২ সালের ১৩ মার্চ গণতান্ত্রিক ছাত্রঐক্যের সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল চলাকালে সন্ত্রাসীরা গুলি চালালে মিছিলের নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা মঈন হোসেন রাজু নিহত হন।

রাজুসহ সন্ত্রাসবিরোধী আন্দোলনের সকল শহীদের স্মরণে নির্মিত এই ভাস্কর্যটি ১৯৯৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য এ কে আজাদ চৌধুরী উদ্বোধন করেন। এই ভাস্কর্য নির্মাণে জড়িত শিল্পীরা হলেন ভাস্কর শ্যামল চৌধুরী ও সহযোগী গোপাল পাল। নির্মাণ ও স্থাপনের অর্থায়নে ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আতাউদ্দিন খান (আতা খান) ও মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর সমিতির সভাপতি লায়ন নজরুল ইসলাম খান বাদল। ভাস্কর্যটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

এমইউ/বিএ/এমকেএইচ

Advertisement