দেশজুড়ে

অর্থাভাবে ঢাবিতে ভর্তি হতে পারছেন না রেন্টু

টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছেন না মেধাবী ছাত্র রেন্টু প্রামানিক। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খ-ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েও অর্থাভাবে রেন্টুর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির খরচ যোগাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনভাবে টাকার ব্যবস্থা করতে পারছে না রেন্টুর পরিবার। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া মেধাবী এ ছাত্রের ভবিষ্যৎ গড়তে চরম হতাশার সাগরে ডুবে আছেন রেন্টুর পরিবার।সিংড়া উপজেলার লালোর ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, ছোট বেলা থেকে রেন্টু শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মেধার পরিচয় দিয়ে এসেছে। রেন্টু এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ এবং এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৯২ অর্জন করে অসাধারণ মেধার পরিচয় রাখে। কিন্তু দারিদ্রের কষাঘাতে রেন্টুর সে স্বপ্ন আজ ভ্রষ্ট হতে চলেছে। তিনি আরও জানান, রেন্টু নাটোরের সিংড়া উপজেলার লালোর ইউনিয়নের রাকসা গ্রামের মসলেম উদ্দিনের ছেলে। চার ভাইয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। বাবা দিনমজুর হওয়ায় পরিবারের চাকা ঘোরাতে তাকে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়। তার উপর তিন ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ মসলেম উদ্দিনের নিকট যেন মড়ার উপর খাড়ার ঘা। রেন্টুর বড় ভাই সেন্টু মেধাবী ছাত্র হওয়া সত্বেও এসএসসি পরীক্ষার পাস করে আর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেননি। সংসারের হাল ধরতে বাবার পাশাপাশি সেন্টুকে ঢাকার একটি গামের্ন্টেসে স্বল্প বেতনের চাকরি নিতে হয়। কিন্তু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে আসতে বাধ্য হয় সে। এদিকে শেষ অবলম্বন বড় ভাই সেন্টুর শয্যাগত হওয়া ও দিনমজুর বাবার স্বল্প আয় দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটা রেন্টুর জীবনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েও লেখাপড়া করতে পারবেন না এমনটি রেন্টু ও তার পরিবার কল্পনাও করতে পারছেন না। উচ্চ মাধ্যমিকে লেখাপড়ার সময় ডাচ বাংলা ব্যাংক যাবতীয় খরচ বহন করে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে আর কোএা শিক্ষাবৃত্তি না পাওয়ায় চোখে সরষে ফুল দেখছেন রেন্টুর বাবা মা। রেন্টুর বাবা মোসলেম উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, এতদিন অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে এসেছি। কিন্তু তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অর্থের অভাবে ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে এ কথা ভাবতেই পারছি না।রেন্টু কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, বড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু টাকার অভাবে আমার সে স্বপ্ন আজ নিঃশেষ হতে বসেছে। প্রভাবশালীদের কাছে গিয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না। সকরেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ হয়তো একটু সাহায্য করলে আমি আমার বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারতাম। রেন্টুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিল হালতি ত্রিমোহিনী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মকসেদ আলী প্রামাণিক জানান, অর্থের অভাবে এমন মেধাবী ছেলের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে এটা দুঃখজনক। তিনি বিত্তবানদের রেন্টুর উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।

Advertisement

রেন্টুকে সাহায্য করতে চাইলে ০১৭০৪২০১০৬৬ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।

রেজাউল করিম রেজা/এসএস/আরআইপি

Advertisement