পটুয়াখালীর মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের ফাঁসিপাড়ায় ‘খাজুরা আশ্রয়ন প্রকল্প’র যাত্রা শুরু ১৯৯৯ সালে। ৬০টি পরিবারের তিন শতাধিক মানুষের বসবাস এখানে। বর্তমানে বিভিন্ন সমস্যায় দিন কাটাচ্ছেন এই আশ্রয়ন প্রকল্পের মানুষ।
Advertisement
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে আশ্রয়ন প্রকল্পের মানুষ অভিভাবকহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। ১০টি ব্যারাকে ৬০টি কক্ষ এই প্রকল্পে। ৩৬টি টয়লেটের ৩০টি নষ্ট গত চার বছর ধরে। বসবাসকারীদের জন্য ছয়টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলেও চারটি নষ্ট অনেক আগে থেকেই। দুটি ভালো থাকলেও মাঝেমধ্যে তাতে বালু ও লবণাক্ত পানি ওঠে। খাবার পানি আনতে হয় অনেক দূর থেকে। গোসল করতে হয় পাশের খালের ময়লাযুক্ত পানিতে। টয়লেট ও পানির সমস্যা তাদের ভোগাচ্ছে বছরের পর বছর।
প্রকল্পের উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বসবাসকারীদের আলীপুর বন্দরে যেতে ২০০৩ সালে নির্মাণ করা হয় খাজুরা আয়রন সেতু। তবে যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে সেতুটি। তাই বাধ্য হয়ে বাসিন্দারা চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে তাতে চলাচল করছেন।
চলাচলের জন্য রাস্তা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে ব্যারাকের এ-মাথা থেকে ও-মাথা পর্যন্ত থাকে হাঁটুসমান কাদা। একটি রাস্তা নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন। রাস্তা আর হচ্ছে না।
Advertisement
আশ্রয়ন প্রকল্পের উঠান আর ঘরের মেঝে সমান সমান। এতে করে বর্ষা মৌসুমে জোয়ার ও বৃষ্টির পানি ঘরে প্রবেশ করে। এখানকার বাসিন্দাদের একজন জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনি যদি বর্ষাকালে আসতেন তাহলে দেখতেন আমরা কত দুর্ভোগে আছি।’ ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দাবি নিয়ে দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট দফতরে ধর্ণা দিলেও এগিয়ে আসেনি কেউ।
ফাঁসিপাড়ার খাজুরা আশ্রয়ন প্রকল্পের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, ‘বর্তমানে টয়লেট ও নলকূপের সমস্যা আমাদের ভোগাচ্ছে। জরুরিভিত্তিতে এগুলো সংস্কার করা দরকার’।
সাধারণ সম্পাদক শ্রী সুধীর চন্দ্র দাস বলেন, ‘আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে ঘরগুলো উঁচু করে মাঠি ভরাট না দিলে ঘরে থাকা যাবে না।’
এ বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন কাজীর সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আশ্রয়নবাসী বিভিন্ন সমস্যায় আছেন। তবে এ সমস্যা দূর করার জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
Advertisement
লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘আশ্রয়নবাসীর টয়লেট ও নলকূপের সমস্যা সমাধানের জন্য চাহিদাপত্র সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। একটি মডেল আশ্রয়ন প্রকল্প গড়ে তোলার বিষয়ে আমার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’ এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মাদ শহীদুল হক বলেন, ‘নলকূপের সমস্যা অচিরেই দূর হবে। টয়লেট ও ঘর সংস্কারের বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট দফতরকে অবহিত করব।’
কাজী সাঈদ/এসআর/এমকেএইচ