মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লোভনীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে পারল না মরক্কো। আরব বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে এবার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করল তারা। বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের কাছ থেকে টেলিফোনে প্রস্তাব পাওয়ার পরপরই তাতে রাজি হয়ে যান মরক্কোর বাদশাহ ৬ষ্ঠ মোহাম্মদ।
Advertisement
চুক্তি অনুসারে, পশ্চিম সাহারার ওপর মরক্কোর আধিপত্যের স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র। ওই অঞ্চলে স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে কয়েক দশক ধরে বিরোধ চলছে মরক্কোর। মরোক্কান প্রভাব থেকে বেরিয়ে সেখানে আলাদা রাষ্ট্র গড়ার চেষ্টা করছে আলজেরিয়া সমর্থিত পলিসিও ফ্রন্ট। ফিলিস্তিনিরা এই চুক্তিরও তীব্র বিরোধিতা করেছে। তারা বলছে, আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গড়ার বহুদিনের দাবি পূরণ হওয়ার আগে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি না দেয়ার অবস্থান থেকে সরে গেছে।
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য বাসাম আস-সালহি মরক্কো-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ চুক্তির প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ২০০২ সালের আরব শান্তি উগ্যোগ থেকে যেকোনও আরব দেশের পশ্চাদপসরণ গ্রহণযোগ্য নয়। এতে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার অস্বীকার করা হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরোধ আরও বেড়ে যাবে।
Advertisement
তবে মরক্কো এক রাজকীয় ফরমানে জানিয়েছে, মরক্কোন বাদশাহ মোহাম্মদ বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে ফোন করে বলেছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের সমাধান হিসেবে দ্বি-রাষ্ট্র ব্যবস্থার পক্ষেই রয়েছে রাবাত।
মরোক্কান বাদশার মতে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান বিরোধের চূড়ান্ত এবং দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের একমাত্র পথ হচ্ছে পারস্পরিক সমঝোতা হওয়া।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মরক্কোর সঙ্গে সুসম্পর্কের এই চুক্তিতে স্বাগত জানিয়েছেন। তার কথায়, এটি আরও একটি শান্তির আলোকবর্তিকা।
চুক্তি অনুসারে ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে মরক্কো। দুই দেশের মধ্যে চালু হবে সরাসরি বিমান চলাচলও।
Advertisement
ইসরায়েল-মরক্কো চুক্তির বিষয়ে হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার বলেছেন, তারা দূতাবাস খোলার উদ্দেশ্য নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে রাবাত ও তেল আবিবে লিয়াজোঁ অফিস আবারও চালু করতে যাচ্ছে। তারা ইসরায়েলি এবং মরোক্কান প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতাও বাড়াবে।
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ এ উপদেষ্টার মতে, ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবেরও সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ অবশ্যম্ভাবী।
এর আগে, আরব দেশগুলোর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সুদান ফিলিস্তিনিদের দাবি পূরণ হওয়ার আগেই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে।
সূত্র: আল জাজিরা
কেএএ/এমএস