বিস্কুট খাওয়ার সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়ায় পরিকল্পিতভাবে মেহেদী হাসান সাগরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন বন্ধু আল আমিন হোসেন নয়ন। বুধবার যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দিতে নয়ন এ কথা জানিয়েছেন।
Advertisement
জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বিচারক সাইফুদ্দীন হোসাইন আসামি নয়নকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আল আমিন হোসেন নয়ন যশোর শহরতলীর বিরামপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া ফকিরের মোড় এলাকার সেলিম হোসেনের ছেলে।
জবানবন্দিতে নয়ন জানিয়েছেন, নিহত মেহেদী হাসান সাগর তার বন্ধু। একই সঙ্গে তারা চলাফেরা করতেন। গত ৭ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাবা হানিফ শেখের দোকান থেকে বিস্কুট নিয়ে খাচ্ছিলেন সাগর। আল আমিন হোসেন নয়ন সেখানে গিয়ে সাগরের সঙ্গে বিস্কুট খান।
Advertisement
এ সময় দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নয়নের মাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালি দেন সাগর। নয়ন এর প্রতিবাদ করলে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ওই সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা প্রাথমিকভাবে মিমাংসা করে দেন।
কিন্তু মনের মধ্যে রাগ পুষে রাখেন নয়ন। সাগরকে খুন করতে নানা পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আল আমিন ৮ ডিসেম্বর রাত ৪টার দিকে বিভিন্ন রকম প্রলোভন দেখিয়ে সাগরকে সঙ্গে নিয়ে শহরের ঘোপ জেলরোডে পৌর কাউন্সিলর মুকসিমুল বারী অপুর বাড়ির পশ্চিম পাশে যান। এ সময় সাগরকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান তিনি। পরদিন সকালে পুলিশ সাগরের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এই ঘটনায় সাগরের বাবা হানিফ শেখ বাদী হয়ে ৮ ডিসেম্বর অজ্ঞাতনামা আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। এর আগে লাশ উদ্ধারের পরই স্ব উদ্যোগে কারণ উদঘাটন এবং খুনিকে আটকের জন্য অভিযান চালায় যশোরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
Advertisement
এক পর্যায়ে ৮ ডিসেম্বর বারান্দীপাড়া খেজুরবাগান এলাকা থেকে নয়নকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে বারান্দীপাড়া বটতলার মনির হোসেনের পরিত্যক্ত খামারে গোবরের মধ্যে থেকে সাগর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়।
বুধবার নয়নকে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই দ্বৈপায়ন মন্ডল। এ সময় সাগরকে হত্যার কারণ উল্লেখ করে আদালতে জবানবন্দি দেন নয়ন। এরপর তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।
মিলন রহমান/এফএ/এমকেএইচ