কাউয়াদিঘি ও হাইল হাওরের অনাবাদি জমিতে আমনের চাষ বাড়ায় ধানের ফলন বেড়েছে। সময় মতো রোদ-বৃষ্টি থাকায় মৌলভীবাজার জেলায় এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
Advertisement
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২০০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে এক লাখ ১ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৮০২ টন।
রাজনগর উপজেলার কৃষক আজাদ মিয়া বলেন, এবার ৮ একর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারে ন্যায্যমূল্য পেলে ধানের ভর্তুকি দিতে হবে না।
একই উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়া বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আশা করি সঠিক বাজারমূল্য পাব।কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বালিয়াগ্রামের ফয়জুর রহমান ফজির বলেন, ৬ কিয়ার জমিতে আমান ধান আবাদ হয়েছে। শ্রমিক সংকট থাকায় ধান কাটতে বিলম্ব হচ্ছে।
Advertisement
জুড়ী উপজেলার কৃষক কাদির মিয়া বলেন, এ বছর তিন বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি। জমির ধান ভালো হয়েছে। সোনালি ধান পেয়ে আমি খুশি।
সাগরনাল ইউনিয়নের উত্তর বড়ডহর গ্রামের কৃষক আহসান আলী চলতি মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই কম হওয়ায় অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।
কমলগঞ্জ উপজেলার সবুর মিয়া বলেন, বর্তমান বাজারে ধানের যে দাম রয়েছে সেই দাম অব্যাহত থাকলে কৃষক লাভবান হবে। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে কিছুটা শ্রমিক সংকট রয়েছে। করোনার কারণে শ্রমিকরা বাড়তি মজুরি দাবি করছেন। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাউয়াদিঘি হাওর পাড়ের বড়কাপন গ্রামের ইটা সমাজকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রাজন আহমদ বলেন, একসময় কাউয়াদিঘি হাওরের যেসব জমিতে আমন ধান চাষ করা যায়নি, এ বছর সেসব জমিতে ভালো ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।
সদর উপজেলার কাউয়াদিঘি হাওর পাড়ের বড়কাপন গ্রামের কৃষক জামাল খান বলেন, ‘ইঁদুরের উপদ্রব রয়েছে। যদি ইঁদুরের উপদ্রব না থাকতো তাহলে আমন ধানের ফলন আরও ভালো হতো। ১১-১২ বিঘা জমি চাষ করে ৪১-৪২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদেও ভালো লাভ হবে।’
Advertisement
একাটুনা এলাকায় কথা হয় শ্রমিক সুন্দর মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ‘আমার মালিকের জমিনে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ভালো ধান হয়েছে। আমরা চারজন মিলে ধান কাটতেছি। আমাদের মজুরি ৫৫০ টাকা করে।’
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময়মতো রোদ বৃষ্টি হওয়ায় জেলায় এবার আমনের ভালো ফলন হয়েছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে সময় লাগছে। আমরাও ধান কাটার মেশিন দিয়ে সহযোগিতা করছি।
এমএমএফ/এমকেএইচ