বিশেষ প্রতিবেদন

ঠেকানো যাচ্ছে না অতিরিক্ত অর্থ আদায়

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও ঢাকা বোর্ডের কঠোর সতর্কীকরণ সত্ত্বেও  ঠেকানো যাচ্ছে না এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়। ফরম পূরণের নির্ধারিত সময়ের আগেই রাজধানীর বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থীদের জিম্মি করে ভিন্ন কৌশলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় চলছে। পরীক্ষার্থী, অভিভাবকদের অভিযোগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, অভিযোগ পেলেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভেঙে দেয়া হবে ম্যানেজিং কমিটি। ঢাকা বোর্ড সূত্র জানায়, বুধবার থেকে বোর্ডের ওয়েব সাইটে সম্ভাব্য পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের অনলাইনের মাধ্যমে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ফরম পূরণ করতে পারবে। বিলম্ব ফি-সহ ফরম পূরণের শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর। ফরম পূরণের জন্য পরীক্ষার্থীদের প্রতি বিষয়ে ৭০ টাকা, ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি প্রতি বিষয়ে ৩০ টাকা, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ফি ৩৫ টাকা, মূল সনদ ফি ১শ’ টাকা, স্কাউট ফি ১৫ টাকা শিক্ষাসপ্তাহ ফি ৫ টাকা বার্ষিক ক্রীড়া ফি ৩শ’ টাকা এবং বিলম্বে ফরম পূরণে অতিরিক্ত আরো ১শ’ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরীক্ষার্থী প্রতি মোট ১১শ’ থেকে ১৪শ’ টাকা বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত। কিন্ত রাজধানীর বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে ঘটছে ভিন্ন ঘটনা। পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বোর্ড নির্ধারিত ফি ছাড়াও মডেল টেস্ট, কোচিং ফি, বিদ্যালয় উন্নয়ন ফি, পরীক্ষা পর্যন্ত পাঠদান, বিদ্যুৎ-পানি বিলসহ বিভিন্ন ফি এর নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- ক্যামব্রিয়ান স্কুলে প্রায় ২৫ হাজার টাকা, উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০ হাজার টাকা, দনিয়া একে হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা, সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজে ১০ হাজার টাকা, আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ে ছয় হাজার টাকা, দনিয়া বর্ণমালা বিদ্যালয়ে সাত হাজার টাকা গত তিন চার দিন ধরে আদায় করা হচ্ছে। অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হলেও কোন রশিদ দেয়া হচ্ছে না পরীক্ষার্থীদের। অতিরিক্ত অর্থ আদায় টের পেলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে না পারে এ আশঙ্কায় নির্ধারিত সময়ের আগেই বিদ্যালয়গুলো ফরম পূরণের অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।  এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ জাগো নিউজকে বলেন, এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এরপরেও সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের নিদের্শনাও রয়েছে। তারপরেও যদি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে দেয়াসহ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রসঙ্গত, গত ২৭ অক্টোবর ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবু বক্কর ছিদ্দিক স্বাক্ষরিত একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ (স্পেশাল অরিজিনাল জুরিজ ডিকশন) সুয়্যোমোটো রুল নং- ২৫/২০১৪ তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখের এক আদেশ মোতাবেক ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফি এর বেশি কোন অজুহাতেই আদায় করা যাবে না। অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।এনএম/এসএইচএস/পিআর

Advertisement