পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ‘কানা বিলের’ হাজার বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত একটি কালভার্টের মুখে বাঁধ দিয়ে প্রভাবশালী মহল পুকুর খনন করায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে চাষিদের অভিযোগ।
Advertisement
কালভার্ট অপসারণ না করলে বিলপাড়ের তিন ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার খাঁনমরিচ ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকার বেশ কছিু চাষি জানান, ভাঙ্গুড়া-নওগাঁ সড়ক এবং সুলতানপুর বটতলার মোড়-মাহাতাব সরকারের বাড়ি সড়কের মাঝে কানা বিল অবস্থিত। এ বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য কয়েক দশক আগে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়।
কিন্তু গত বছর খাঁনমরিচ গ্রামের দুই ব্যক্তি ‘সুলতানপুর বটতলা মোড় থেকে মাহাতাব সরকারের বাড়ি’ সড়কের মাঝামাঝিতে থাকা কালভার্টের মুখ আটকে দিয়েছেন। তারা ওই কালভার্টটির মুখ ইট-বালি- সিমেন্ট দিয়ে বন্ধ করে দিয়ে পাশে পুকুর খনন করেছেন।
Advertisement
ফলে কালভার্টটি অকেজো হয়ে পড়ায় বিলে পানি নিষ্কাশনের পথও বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বর্ষা হলে এমনকি ভারি বৃষ্টি হলেও বিলপাড়ের প্রায় হাজার বিঘা আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।
সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং কানা বিল পাড়ের জমির মালিক কৃষক দুলাল আলী, মোজহারুল ইসলাম, ফজলার রহমান, মোশারফ হোসেন, আ. সাত্তার ও বেলাল হোসেন জানান, তাদের কানা বিলের তিন ফসলি হাজার বিঘা জমি আজ ‘কানা’ (এক ফসলি জমি) হয়ে গেছে।
এলাকাবাসীর দাবির মুখে দু’ বছর আগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ এলজিএসপির প্রকল্পের মাধ্যমে সুলতানপুর বটতলার মোড় থেকে মাহাতাব সরকারের বাড়ি সড়কের মাঝামাঝিতে দুইটি কালভার্ট নির্মাণ করে দেয়। কিন্তু কালভার্ট দুটি অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা। কারণ কৃষি জমি থেকে প্রায় তিন ফুট উঁচু সেই কালভার্ট। এতে পানি নির্গত হলেও প্রায় আড়াই-তিন ফুট পানি জমিতে থেকেই যায়। তারা কালভার্টের মুখে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ এবং কালভার্ট পুননির্মাণের দাবি জানান।
স্থানীয় কৃষিকর্মীরাও জানান, বন্যার পানি নেমে গেছে। তবে পাবনার কালভার্টের মুখ আটকানো থাকায় প্রায় ১ হাজার বিঘা তিন ফসলি আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। বন্যার পানি দ্রুত নামতে না পারায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তারা জানান।
Advertisement
তারা জানান, তিন ফসলি জমিগুলো এখন এক ফসলি জমিতে পরিণত হওয়ার পথে।
এ ব্যাপারে খাঁনমরিচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুর রহমান আসাদ বলেন, এলাকার দু’ ব্যক্তি অবিবেচকের মতো কাজ করেছেন। তারা কালভার্টের মুখে বাধ দিয়ে পাশে পুকুর খনন করেছেন। তারা নিজেরা মাছের চাষ করলেও কানা বিলের প্রায় হাজার বিঘা জমি জলাবদ্ধ করে দিয়েছেন।
তিনি কালভার্টটির মুখের স্থাপনা কেটে পানি নিষ্কাশনের পথ খুলে দিতে চেষ্টা করছেন বলে জানান। কালভার্টটি পুনঃস্থাপন করার বিষয়টিও তারা পরিকল্পনায় রেখেছেন বলে চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।
আমিন ইসলাম/এফএ/জেআইএম