সাহিত্য

সাজেদুর আবেদীন শান্তর তিনটি কবিতা

নাবিকের পোশাক

Advertisement

তুমি যখন চলে গেলে;তখন বর্ষাকাল।আমি বর্ষাকাল ভালোবাসি,আমি আনন্দ পাই এই ভেবে যে,তুমি চলে গেছো বর্ষাকালে।

মৃত্যু আমার তখনো আসেনিকারণ আমি নাবিকের পোশাক হারিয়ে ফেলেছি,নাবিকের পোশাক ছাড়া আমারমরতে ইচ্ছে করে না।

নাবিকের পোশাক পরে আমি তোমার হাতে হাত রেখে সমুদ্র দেখবো,মৃত্যু তখন আসবে। এই তো কথা ছিল!

Advertisement

কিন্তু তোমার তো খুব তাড়া!নাবিকের পোশাক খুঁজে না পেতেই তুমি চলে গেলে, এখন আমি রয়েছি মৃত্যুহীন।

****

অশ্বত্থ আমার বাবা

আমি ভয় পাই না—আমি পথ চলতে থাকি নিভৃতে!ভয় কি জিনিস আমি বুঝি না,হাঁটতে হাঁটতে অশ্বত্থের নিচে এসে দাঁড়াই!দেখি একটা চড়ুই বসে আছে। আমাকে ডেকে বলছে,তোমার মতো আমিও ভয় পাই না।বললাম, কেন?সে বলল, আমার এই অশ্বত্থ গাছ বাবা আছে।

Advertisement

আমি চড়ুইয়ের কথা বুঝলাম না!চলে এলাম অশ্বত্থের নিচ থেকে।

আজ আমি ভয় পাই!খুব ভয় পাচ্ছি!পা মেপে মেপে ফেলছি মাটিতে!গিয়ে বসলাম সেই অশ্বত্থ গাছের ছায়ায়।চড়ুইটি আবার বলছে, ভয় পাও?আমি বলছি, হ্যাঁ। প্রচণ্ড ভয় পাইচড়ুই বলছে, কেন?আমি বললাম, আমার বাবা নেই।

আমি আজ ঠিকই চড়ুইয়ের কথার মানে বুঝেছি!আমি আজই বাবা নামক অশ্বত্থ গাছটাকে চিনেছি।

****

নিষিদ্ধ চেতনায়

হঠাৎ ঝড়—একে একে মদের বোতল দিয়ে সাজানোআমার পৃথিবী ভেঙে যাচ্ছে, চারদিকে ভাঙা কাঁচের টুকরো ছড়িয়ে আছে;তুমি সামনের দিকে তাকিয়ে, এগোতে থাকো আমার দিকে।হঠাৎ একটা কাচের টুকরো বিঁধে গেল তোমার পায়ে...

তোমার চোখ আমার দিকেআর আমি তাকিয়ে আছি রক্তে ক্ষত-বিক্ষত তোমার পায়ের দিকে।

তুমি এগোচ্ছ এগোচ্ছ— আমি ভয়ে তটস্থ। আমার গা ঘামছেবিশ্বাস করো প্রিয়তমা।তোমার রক্তের ফোটায় যত হিমোগ্লোবিন,আমার ঘামের ফোটায় তত বিরহ।হঠাৎ ঘুম ভেঙে উঠে দেখি, আমি শুয়ে আছি শিমুল তুলার বিছানায়।আমি ব্যর্থ—আজও তোমার রক্তের দামে,স্বপ্ন বেচতে পারলাম না।

এসইউ/এমএস