বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য রক্ষায় সরকারকে কঠোর হতে হবে। এক্ষেত্রে রাজনীতির নামে সহনশীলতা দেখানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষকরা।
Advertisement
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ধর্মান্ধ উগ্র মৌলবাদী অপশক্তির কর্তৃক ভাস্কর্য বিরোধিতার নামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন ও ভাংচুরের প্রতিবাদ এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি আয়োজিত মানববন্ধনে শিক্ষকরা এসব মন্তব্য করেন।
মানববন্ধনে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘সৃজনশীল শিল্প প্রকাশের মাধ্যম হলো ভাস্কর্য। এটি মানুষের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে থাকে। যখন ভাস্কর্যবিদ্যা বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন মানবিকতা বাধাগ্রস্ত হয়। সভ্যতাবিরোধী এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়া বাঞ্ছনীয়। এদেরকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, ‘এই মৌলবাদী গোষ্ঠী ১৯৭১ সালে দাঁড়িয়েও পরাজিত হয়েছে। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ধর্মান্ধ এই গোষ্ঠী বাঙালির কৃষ্টির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বারবার পরাজিত হয়েছে। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ভাঙচুর ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য নয়। এদেশে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সাংস্কৃতিক চেতনার বিরুদ্ধে হামলা। এরা একজনও একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দাড়ায়নি বরং বিরোধিতা করেছে। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মানেই আধুনিক বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। অতীতেও আমরা এদেরকে পরাজিত করতে পেরেছি। ভবিষ্যতেও এদেরকে পরাজিত করতে পারব।’
Advertisement
আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘রাজনীতি করা যায় কিন্তু কতগুলো মৌলিক বিষয়ে কখনো সমঝোতা হতে পারে না। আজকে উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে রাষ্ট্র নানানভাবে সহযোগিতা করছে। সহনশীলতা ও উদারতার দিক থেকে দেখছে। তারা কিন্তু কখনোই সেটাতে সন্তুষ্ট হয়নি। দুধ দিয়ে সাপ পোষা যায় না। তাদের ডিগ্রিকে সম্মান দেয়া যায়। তাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিস্থাপন করা যায়। কিন্তু দিনশেষে তারা খেলাফতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় উন্মত্ত। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর আঘাত মানে বাংলাদেশের ওপর আঘাত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আঘাত। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা এমন বাংলাদেশ চাইনি।’
মানবন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. মো লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীসহ শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
এসএস/এমকেএইচ
Advertisement