কানাডার বেগমপাড়া এবং বাংলাদেশের অর্থ বিদেশে পাচার নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রতিদিনই খবর প্রচার হওয়ায় প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে ক্ষোভ দিন দিন বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে টরেন্টো, মন্ট্রিয়ল ও আলবার্টার ক্যালগেরিতে প্রবাসী বাঙালিরা সভা সমাবেশ, মানববন্ধন করেছে।
Advertisement
করোনা মহামারির কারণে প্রবাসী বাঙালিরা ঘর থেকে বের হতে না পারলেও তাদের মধ্যে অর্থপাচারের বিরুদ্ধে চলছে তীব্র ক্ষোভ। কানাডার বেগমপাড়া এবং বাংলাদেশের অর্থপাচার নিয়ে প্রবাসী সাংবাদিক ও জাগো নিউজের কানাডা প্রতিনিধি আহসান রাজীব বুলবুলের সাথে কথা বলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম. বাহাউদ্দিন নাছিম।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমরা কিছুদিন ধরে সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেছি কানাডার টরেন্টোতে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিশেষ করে সাবেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেগমদের এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী নেতাসহ কোনো কোনো রাজনীতিক নেতার সম্পর্কেও জানতে পারি যে তারা এখানে বিরাট একটি এলাকা নিয়ে আবাসিক পাড়ার মতো গড়ে তুলেছেন- এটি বেগমপাড় নামে খ্যাত।
তিনি বলেন, এখানে যারা বসবাস করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মারফত জানতে পারলাম, যারা বসবাস করেন তাদের অধিকাংশই সরকারি কর্মকর্তা। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় আমরা দেখি, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেখতে পাই বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে সিঙ্গাপুর, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ মালয়েশিয়া এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দেশেও এ টাকা পাচার হচ্ছে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, যে টাকা বাংলাদেশের জনগণের উন্নয়নে, জনগণের স্বার্থে ব্যয় হওয়া দরকার, বাংলাদেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্নভাবে শিল্প কলকারখানা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আয় বৃদ্ধি হতে পারে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে, মানুষের বেকারত্ব থেকে বাংলাদেশের মানুষ রক্ষা পাবে, সেই কাজটি না হয়ে বাংলাদেশের অর্থপাচার হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে।
আমরা বলেছি এ ধরনের ঘটনা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কারা এরা? এরা যেই হোক যেহেতু এরা বাংলাদেশের নাগরিক তারা যদি সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশের টাকা পাচার করে নিয়ে যেতে পারে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া উচিত। কারণ বাংলাদেশের টাকা বিদেশে যারা পাচার করেছেন সেই পাচার করা টাকা বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে রাষ্ট্রের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা দরকার।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আইন অনুযায়ী তাদের বিচার হওয়া দরকার। যাতে বাংলাদেশের টাকা বাংলাদেশ থেকে কোনো ভাবেই পাচার হয়ে যেতে না পারে। যদিও এটা একদিনে বা এই মুহূর্তেই সবকিছু বন্ধ করা সম্ভব নয়, এটা আইনি প্রক্রিয়ার ব্যাপার। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত। সরকারি কর্মকর্তা হোক অথবা ব্যবসায়ী অথবা নেতাই হোক তাদের পরিচয়টাও জাতির সামনে উন্মোচন হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, আমি মনে করি শুধু রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন করার জন্য বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে রাজনীতিবিদদেরই কটাক্ষ করা হয়। মূলত এখানে শুধু রাজনীতিবিদই নন, আমরা দেখেছি বিভিন্ন মাধ্যমে এর অধিকাংশই কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী নেতা। সেক্ষেত্রে যদি রাজনীতিবিদও থেকে থাকে সেটাও দেশবাসী জানার অধিকার রাখে। পুরো বিষয়টি প্রকাশ হওয়া দরকার।
Advertisement
শুধু বিরাজনীতিকরণকেই উৎসাহিত করার জন্য, বিরাজনীতিকরণর জন্য, রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় এবং কাম্য নয়। কারণ বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে হাঁটছে, বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রগতির পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে। এই এগিয়ে চলার পথে যারা বাধাগ্রস্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত করে অথবা এই পথকে যারা নষ্ট করতে চায়, যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়, সেই অপশক্তিই এ ধরনের অপপ্রচার চালায়।
তিনি আরো বলেন, সংবাদমাধ্যমগুলো বিশেষ করে কানাডাসহ বিদেশে যে জায়গাগুলোতে সাংবাদিক আছেন তারাও এ ব্যাপারে প্রকৃত চিত্রটা তুলে ধরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রগতিতে শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করতে পারেন।
এমআরএম/জেআইএম