জাতীয়

কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই বিদেশ ফেরত যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা

বিদেশ ফেরত যাত্রীদের করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষার জন্য কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরি বসানো হচ্ছে। সেখান থেকে তিনদিনের মধ্যে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেয়া হবে। এই ফলাফলের ভিত্তিতেই বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ অর্থাৎ হাসপাতালে ভর্তি নাকি স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

Advertisement

আপাতত রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশে ঢোকা যাত্রীদের ক্ষেত্রেই এ নিয়ম চালু করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। খুব শিগগিরই প্রক্রিয়াটি চালু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র।

সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে দেশের সবগুলো বিমান, স্থল এবং সমুদ্র বন্দর (পোর্ট অব এন্ট্রি) দিয়ে আসা দেশি-বিদেশি যাত্রীদের সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে ‘করোনা নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট আনা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে পরামর্শ দেয় কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটি। এ পরামর্শ বাস্তবায়নে বন্দরগুলোতে নেয়া হয় কঠোর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছাড়া দেশে ঢুকলে দুই সপ্তাহ বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন তথ্য প্রকাশের পর বিদেশ ফেরত যাত্রীদের অধিকাংশই ঝামেলা এড়াতে সার্টিফিকেট সঙ্গে নিয়েই দেশে ফিরছেন।

Advertisement

শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ বুধবার এ প্রতিবেদককে জানান, ৯০ শতাংশ বিদেশ ফেরত যাত্রী নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়েই এখন দেশে ফিরছেন। তবে বাকি ১০ শতাংশ এখনও নেগেটিভ সার্টিফিকেট না নিয়েই ফেরায় রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি ও আঁশকোনার হজ ক্যাম্পে সেনাসদস্যদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে প্রতিদিনই লোকের সংখ্যা বাড়ছে।

এমতাবস্থায় উত্তরার দিয়াবাড়িতে আগে যেখানে তিনটি ভবনে বিদেশফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হতো, বর্তমানে আরও একটি নতুন ভবন যুক্ত করতে হয়েছে। এ কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ১ হাজার ৯০০ মানুষকে রাখা যাবে। অপরদিকে, বিমানবন্দরের অদূরে ২ হাজার ৩৫০ জন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আঁশকোনা হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে ৪৫০ জনকে।

শাহরিয়ার সাজ্জাদ আরও জানান, নেগেটিভ সার্টিফিকেট না আনলেই কোয়ারেন্টাইন থাকতে হবে এমন ঘোষণার পর সংখ্যায় কম হলেও অনেকেই সার্টিফিকেট ছাড়াই আসছেন। ফলে প্রতিদিনই নতুন নতুন লোককে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হচ্ছে। দ্রুত নমুনা পরীক্ষা করে ফলাফলের ভিত্তিতে তাদের চিকিৎসা কিংবা বাড়ি পাঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, বিদেশ ফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যেন বেশিদিন থাকতে না হয় সেজন্য আইইডিসিআরের একটি ভ্রাম্যমাণ দল নমুনা সংগ্রহ করে তিনদিনের মধ্যে ফলাফল দেবে। তবে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই ল্যাব স্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।

Advertisement

এমইউ/এসএস/পিআর