দেশজুড়ে

পাঠক শূন্য গণগ্রন্থাগারে বস্তাবন্দী ৯ মাসের দৈনিক পত্রিকা

সামসুল ইসলাম গ্র্যাজুয়েশন শেষে বাড়িতে রয়েছেন এক বছর ধরে। করোনার কারণে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়েনি তার। দেখবেনই বা বা কী করে! গণগ্রন্থাগার বন্ধ গত ৯ মাস ধরে। ফলে এখন সব প্রস্তুতিতে পড়েছে ভাটা। ৯ মাস সরকারি গণগ্রন্থাগার বন্ধ থাকায় পড়তে পারছেন না পছন্দের কোনো কিছুই।

Advertisement

তমলা রহমান মাগুরা সরকারি কলেজের অনার্স পড়েন। তার অবস্থাও সামসুল ইসলামের মতই। বাড়িতে পাঠ্যবই ছাড়া অন্য কোনো বই নেই। ছোটবেলা থেকেই বই পড়ায় তার ঝোঁক বেশি। তাই সাত কিলোমিটার দূরে ছোট পালিয়া গ্রাম থেকে সাইকেল চালিয়ে শুধু বই আর পত্রিকা পড়তে মাগুরা শহরে আসতেন। কিন্তু গণগ্রন্থাগার বন্ধ থাকায় সেই ঝোঁকেও ভাটা পড়তে শুরু করেছে।

সামসুল ও তমালের মত মাগুরা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সামনে প্রায় প্রতিদিনই রিকশা নিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া রাইসা তিথি। গত তিন মাস প্রায় প্রতিদিনই এসেছেন গ্রন্থাগার খোলা কিনা তা দেখতে। তবে একদিনও খোলা পাননি।

করোনা শুরুর পর থেকে সারাদেশের সঙ্গে মাগুরা জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারও রয়েছে বন্ধ। তবে দাফতরিক কার্যক্রম চলেছে নিয়মিত। বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৩৭ হাজার বই রয়েছে এ গণগ্রন্থাগারে। এসব বইয়ের বেশিরভাগ পাঠকই ছিল শিক্ষার্থী।

Advertisement

গণগ্রন্থাগার সূত্রে জানা গেছে, করোনার আগে প্রতিদিন ১৫০-২০০ পাঠক নিয়মিত আসতেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল শিশু পাঠক। দৈনিক পত্রিকা রাখা হয় ১৩টি। যা গত ৯ মাসে কেউ পড়তেও পারেনি।

গণগ্রন্থাগারর ভেতরে দেখা যায় ৯ মাসের দৈনিক পত্রিকাগুলো নতুন অবস্থায় বস্তা বন্দী রয়েছে।

গ্রন্থাগারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, পাঠক বিভিন্ন সময়ে খোঁজ নিতে আসেন কবে গণগ্রন্থাগার খুলবে, কবে থেকে আবার পছন্দের বই পড়তে পারবেন।

তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা এলেই খুলে দেয়া হবে গণগ্রন্থাগার। এছাড়া পত্রিকাগুলো ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

Advertisement

এএইচ/পিআর