শহিদ বিন ইউসুফ স্টাকালার দুঃসাহসিক রথযাত্রা। ২৬ মাস সময় পায়ে হেঁটে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মুসলমানদের প্রথম কেবলা, ফিলিস্তিনের পবিত্র নগরী জেরুজালেমে অবস্থিত মসজিদে আকসায় এসে পৌঁছেছেন। বায়তুল মোকাদ্দাসে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে তিনি পায়ে হেঁটে এ যাত্রা শুরু করেন। দীর্ঘ যাত্রা পথে ৮ দেশের অনেক মসজিদে তিনি পড়েছেন নামাজ।
Advertisement
শহিদ বিন ইউসুফ দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী কেপটাউন থেকে ২০১৮ সালের ১৫ আগস্ট তার যাত্রা শুরু করেন। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৮টি দেশ অতিক্রম করে আসতে তার সময় লেগেছে দুই বছর দুই মাস তথা ২৬ মাস। এ পথের দূরত্ব প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার হলেও তাকে আরও বেশি পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। কারণ তাকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ফেরত পাঠায় দখলদার ইসরাইল।
যাত্রাপথে শহিদ বিন ইউসুফ প্রথমে জিম্বাবুয়ে, জাম্বিয়া, তানজানিয়া, কেনিয়া, ইথিওপিয়া, সুদান এবং মিসর পাড়ি দিয়ে ফিলিস্তিনের গাজায় প্রবেশ করেন। দখলদার ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা দিয়ে তাকে জেরুজালেমে প্রবেশ করতে দেয়নি। পরে তাকে মিসর ফিরে যেতে হয়। তারপর মিসর থেকে জর্ডান হয়ে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর হয়ে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে জেরুজালেম এসে পৌঁছে দক্ষিণ আফ্রিকার এ যুবক।
শহিদ বিন ইউসুফ জানান, ‘মুসমানদের প্রথম কেবলা ও তৃতীয় পবিত্রতম স্থান মসজিদে আকসায় নামাজ পড়তে ২০১৮ সালে কেপটাউন থেকে হাঁটা শুরু করি। অবশেষে এ বছরের নভেম্বরে জেরুজালেম এসে পৌঁছাই।
Advertisement
এক ভিডিও বার্তায় শহিদ বলেন, ‘মসজিদে আকসায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমাকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এটা আমার জন্য অনেক সম্মানের। আমি মসজিদে আকসায় নামাজ পড়ার সুযোগ পাওয়ায় মহান আল্লাহ শুকরিয়া আদায় করি।’
দীর্ঘ এ যাত্রা পথের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে শহিদ ইউসুফ জানান, গত মার্চে মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে জর্ডান থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফেরত যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সীমান্ত বন্ধ থাকায় ফিরে যাওয়া হয়নি।
যেহেতু তার ফিরে যাওয়া হয়নি; আর মুসলিমদের র্ততীয় পবিত্রতম স্থান বায়তুল মুকাদ্দাসে নামাজ পড়ার সৌভাগ্য লাভ করেছেন, তাই এবার তার মিশন- মসজিদে আকসা থেকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শহর মদিনায় গমন করা। মদিনার জিয়ারত ও পবিত্র নগরী মক্কায় হজ করেই তিনি নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন শহিদ বিন ইউসুফ।
দীর্ঘ এ যাত্রা পথের সুখ-দুঃখ নিয়ে তিনি ‘মাই স্পিরিটেড স্ট্রাগল’ নামে ইতিমধ্যে একটি লিখেছেন। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন থেকে শুরু করে জেরুজালেম পর্যন্ত পৌঁছতে যব বিবরণ ও ঘটনা স্থান পেয়েছে।
Advertisement
এমএমএস/জেআইএম