দেশজুড়ে

নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে খুলনার বড় বাজারের ৩০০ দোকান

ভৈরব নদ ও রূপসা নদীর ভাঙন থেকে খুলনা শহরকে রক্ষা করতে শহর রক্ষা প্রকল্পের বাঁধ নির্মাণকাজ ৯৩ শতাংশ শেষ হয়েছে। ২৯ কোটি ৯৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ চলছে। এটি বাস্তবায়ন হলে সরকারি কর্মকর্তাদের বাসভবন ও বড় বাজারের ৩০০ দোকান ভৈরব নদ ও রূপসা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আগামী বছরের জুন মাস নাগাদ এর কাজ শেষ হবে।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা শহর রক্ষা প্রকল্প নগরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ৩১ মার্চ খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে খুলনাবাসীর পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে অনত্যম ছিল শহর রক্ষা প্রকল্প। এরই সূত্র ধরে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি শহর রক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে।

ষাটের দশক থেকে ভৈরব নদ ও রূপসা নদীর ভাঙন দেখা দেয়। এতে সরকারি কর্মকর্তাদের বাসভবন, জেলখানা ঘাট এলাকায় ইট-বালু ব্যবসায়ী ও বড় বাজারের আড়ৎদাররা বিভিন্ন সময় হুমকির মুখে পড়েন। রূপসা নদী ও ভৈরব নদ খুলনাবাসীর জন্য আতঙ্ক। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় নদী ভাঙনে বড় বাজারের অনেক আড়ৎ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। খুলনা বড় বাজার বাণিজ্য কেন্দ্র রক্ষার জন্য বিভিন্ন মহল দাবি করে আসছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা-২ রূপসা নদী ও ভৈরব নদের ভাঙন থেকে খুলনা শহর রক্ষার জন্য বড় প্রকল্প হাতে নেয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২৯ কোটি ৯৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির ৯৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জুন মাস নাগাদ এর কাজ শেষ হবে।

Advertisement

পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী জানান, বাঁধ নির্মাণের ফলে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অফিস, আবাসিক এলাকা, রুজভেল্ট জেটি নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। পাশাপাশি বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা জজের বাসভবনও নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।

খুলনা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহাগ দেওয়ান জানান, দেশের তিনটি বাণিজ্য কেন্দ্রের মধ্যে খুলনা অন্যতম। ভৈরব নদ সংলগ্ন বড় বাজার বাণিজ্য কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন হাজার-হাজার বস্তা পণ্য বিভিন্ন নৌযানে ওঠানামা করে। মজবুত বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হলে ব্যবসায়ীদের সম্পদ ও প্রতিষ্ঠান রক্ষা পাবে। মালামাল ওঠানামা সহজ হবে। দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।

খুলনা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শ্যামল কুমার হালদার জানান, এই বাঁধের ফলে ভৈরব নদের ভাঙন থেকে ব্যবসায়ীরা রক্ষা পাবে। হাসপাতাল ঘাট থেকে ডাবঘাট পর্যন্ত আনুমানিক ১৫শ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঝুঁকিমুক্ত হবে। শহর রক্ষা প্রকল্প বড় বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় রাজনীতিকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল।

আলমগীর হান্নান/আরএআর/জেআইএম

Advertisement