বিশেষ প্রতিবেদন

ঢাকার প্রবেশমুখে নতুন ১০ বাস টার্মিনাল

##রাজধানীতে ঢুকবে না আন্তঃজেলা বাস##বিদ্যমান তিন টার্মিনাল নগরীর বাসের জন্য ব্যবহার হবে##আগামী বছরই বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রম দৃশ্যমান হবে

Advertisement

ঢাকা শহরের সীমান্তবর্তী এলাকায় ১০টি টার্মিনাল নির্মাণ করার প্রস্তাব করেছে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি। এই কমিটি মনে করে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রাজধানীতে আন্তঃজেলা বাস ঢুকবে না। নির্ধারিত বাস টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে বাসগুলো তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে চলে যাবে। এতে নগরের গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আসবে, কমবে যানজট।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আগে আরও ভালো করে সম্ভাব্যতা যাচাই করার কথা বলছেন গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এ প্রকল্পে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বড় বিষয় নয়, তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করাই জরুরি। বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসন এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এছাড়া বাসগুলো ঠিকভাবে চলছে কি-না, যাত্রীরা সেবা পাচ্ছে কি-না, সেটা তদারকি করতে হবে।

২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে বাস রুট রেশনালাইজেশন করার জন্য ১০ সদস্যের একটি কমিটি করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এরপর কমিটি বাস্তবতা সমীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পরামর্শক নিয়োগ করে। দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে সমীক্ষা করা হয়। পরে গত ১০ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে এ কমিটির ১৩তম সভায় প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। এই প্রতিবেদনেই নতুন ১০টি বাস টার্মিনালের প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও বাস রুট রেশনালাইজেশন ও কোম্পানির মাধ্যমে বাস পরিচালনা পদ্ধতির প্রবর্তক ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। এখন তার পরিকল্পনাগুলোই বাস্তবায়ন করছে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি।

Advertisement

ঢাকার বাইরে ১০ টার্মিনালবাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি সূত্র জানায়, সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী টার্মিনালে দেড় হাজার বাসের ধারণক্ষমতা রয়েছে। অথচ এখন টার্মিনাল তিনটিতে প্রতিদিন ৯ হাজার ২৯৮টি বাস রাখা হয়। আরও কয়েক হাজার বাস নগরীর বিভিন্ন সড়কে পার্কিং করা হয়। যানজটের বড় একটা কারণ এটা। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ঢাকা শহরের সীমান্তবর্তী এলাকায় নতুন করে আরও ১০টি টার্মিনালের প্রস্তাব করা হয়েছে কমিটির তরফ থেকে।

এগুলো হচ্ছে- কাঁচপুর উত্তর (১৫ দশমিক ৪৬ একর), কাঁচপুর দক্ষিণ (২৭ দশমিক ৭১ একর), কেরানীগঞ্জের বাঘৈর (৩৩ দশমিক ৬৩ একর), সাভারের হেমায়েতপুর (৩৬ দশমিক ৫০ একর), বিরুলিয়া (১৪ দশমিক ৫৩ একর), গাজীপুর (১১ দশমিক ৭০ একর), নবীনগর-চন্দ্রা রোডের বাইপাইল (৪০ দশমিক ৪০ একর), কাঞ্চন এলাকা (২৪ দশমিক ২৪ একর), আটিবাজারের ভাওয়াল (২৫ দশমিক ৭৮ একর) এবং ভুলতা (২৪ দশমিক ২২ একর)।

এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সায়েদাবাদ, মহাখালী এবং গাবতলীর বিদ্যমান বাস টার্মিনালগুলো কী কাজে ব্যবহার করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওই তিনটি বাস টার্মিনাল নগরের ভেতর যেসব পরিবহন চলবে, সেগুলোর জন্য ব্যবহার করা হবে। এতে রাস্তার ওপর কোনো গাড়ি পার্কিং করা লাগবে না। যানজটেরও সৃষ্টি হবে না।’

তিনি বলেন, বাস রুট রেশনালাইজেশন করার জন্য একমত রয়েছেন পরিবহন মালিকরা। সবার চাওয়া সুন্দরভাবে যেন শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা হয়।

Advertisement

বর্তমানে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকার বাইরে থেকে যেসব বাস আসবে সেগুলো শহরের সীমান্তবর্তী এলাকায় নির্ধারিত টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে দেবে। এরপর সিটি সার্ভিস বা এমআরটি বা অন্য সেবাদাতা বাহনের মাধ্যমে যাত্রীরা নিজ গন্তব্যে যাবেন। আমরা সেই নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবো। এতে ঢাকার মূল শহরের ওপর গাড়ির চাপ কমবে। আগামী বছরের মধ্যেই বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রম দৃশ্যমান হবে।’

এমএমএ/এইচএ/জেআইএম