আন্তর্জাতিক

জাপানে করোনায় মোট মৃত্যুর চেয়ে এক মাসে আত্মহত্যার সংখ্যা বেশি

এযাবৎকালে বৈশ্বিক মহামারিগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে করোনাভাইরাস। ইতোমধ্যেই এর হানায় বিশ্বজুড়ে সাড়ে ১৪ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন। সংক্রমণ শুরুর প্রায় এক বছর হতে চললেও এখনও কমেনি করোনার প্রকোপ। প্রতিদিনই মৃতের তালিকায় যোগ হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।

Advertisement

তবে বিশ্বের কিছু এলাকায় ভাইরাস যত মানুষের প্রাণ কেড়েছে, তার চেয়ে বেশি নিয়েছে মানুষ নিজেই। এশিয়ার দেশ জাপানে গত অক্টোবরে যত মানুষ আত্মহত্যা করেছেন, গোটা মহামারিকালে সেখানে করোনাভাইরাসও তত মানুষের প্রাণ কাড়েনি।

জাপানের ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সির তথ্যমতে, গত অক্টোবরে দেশটিতে আত্মহত্যা করেছেন মোট ২ হাজার ১৫৩ জন। আর শুক্রবার পর্যন্ত সেখানে মাত্র ২ হাজার ৮৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ আত্মহত্যার হার বিশিষ্ট দেশগুলোর একটি জাপান। ২০১৬ সালে সেখানে প্রতি লাখে আত্মহত্যার হার ছিল ১৮ দশমিক ৫, যা পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং বার্ষিক বৈশ্বিক গড়ের প্রায় তিনগুণ।

Advertisement

জাপানে আত্মহত্যার হার এত বেশি হওয়ার কারণ বেশ জটিল। তবে সুদীর্ঘ কর্মঘণ্টা, স্কুলের চাপ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং সাংস্কৃতিক কুসংস্কার এর অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়।

তবে গত ১০ বছর ধরে জাপানে আত্মহত্যার হার কিছুটা কমছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত বছর সেখানে মোট আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ হাজার, যা ১৯৭৮ সালে হিসাব শুরুর পর থেকে সর্বনিম্ন।

কিন্তু, করোনাভাইরাস মহামারি সেই ধারা আবারও উল্টে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে, নারীদের আত্মহত্যার হার অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।

যদিও জাপানে পুরুষের তুলনায় নারীদের আত্মহত্যার হার অনেক কম, তবে সাম্প্রতিক সময়ে সেটি বাড়তে দেখা যাচ্ছে। গত অক্টোবরে দেশটিতে নারীদের আত্মহত্যার হার ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮৩ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেড়েছে মাত্র ২২ শতাংশের মতো। টোকিওর ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ও আত্মহত্যা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ মিচিকো ইউয়েদা বলেন, আমাদের লকডাইন নেই, অন্য দেশের তুলনায় করোনার প্রভাবও অনেক কম। তারপরও আত্মহত্যার সংখ্যা অনেক বাড়তে দেখছি। এর মানে, অন্য দেশগুলোও একই অবস্থা বা ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক হারে আত্মহত্যার সংখ্যা বাড়তে দেখতে পারে।

Advertisement

সূত্র: সিএনএন

কেএএ/এমএস