দেশজুড়ে

নেত্রকোনায় ১০ মাসে ১১১ জন ধর্ষণের শিকার

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে নেত্রকোনায় ১১১ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। লাগামহীনভাবে বেড়ে যাওয়া এ ধর্ষণের ঘটনায় জেলার সর্বস্তরের অভিভাবকদের মাঝে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ১০টি উপজেলা নিয়ে নেত্রকোনা জেলা গঠিত। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গত জানুয়ারি মাসে ৮টি, ফেব্রুয়ারি মাসে চারটি, মার্চ মাসে ১০টি, এপ্রিল মাসে ছয়টি, মে মাসে ১৯টি, জুন মাসে ১২টি, জুলাই মাসে ১৭টি, আগস্ট মাসে ১৮টি, সেপ্টেম্বর মাসে ১২টি, অক্টোবর মাসে পাঁচটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে ক্রমান্বয়ে দূরে সরে যাওয়া, বি-জাতীয় আকাশ সংস্কৃতির করাল আগ্রাসন, মাদকের ভয়াল থাবা, পাড়া-মহল্লা ও হাট-বাজারে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানগুলো থেকে মেমোরি কার্ডের মাধ্যমে গান-ছবি ডাউনলোড করার নামে অবাধে নীল ছবি ডাউনলোড, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে চায়ের দোকানে সিনেমা দেখানোর পাশাপাশি রাতের আধাঁরে নীল ছবি প্রদর্শন।  এসবের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ ও যথাযথ আইনের প্রয়োগ না হওয়ায় ক্রমান্বয়ে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ফলে শান্তিপ্রিয় নেত্রকোনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির পাশাপাশি ধষর্ণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের নিরাপদ চলাফেরা নিয়ে চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছে।নেত্রকোনা জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদিকা তাহেজা খানম জাগো নিউজকে জানান, সরকারী পরিসংখ্যানে জেলায় ১১১টি ধর্ষণের মামলা হলেও বাস্তবে ধর্ষণের ঘটনা বহুগুণ বেশি। অনেক মেয়ে স্কুল-কলেজে যাওয়া আসার পথে কিংবা নারীরা তাদের কর্মস্থলে ধর্ষিত হলেও লোকলজ্জা আর পুলিশি হয়রানির ভয়ে মুখ খুলতে চান না। নারীদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত, তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন, মার্জিত পোষাক পরিধান, ইভটিজিং ও ধর্ষণ প্রতিরোধে সামাজিক প্রতিরোধ, পুরুষদের মাঝে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনা বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।       এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব চৌধুরী জাগো নিউজকে জানান, ধর্ষণের ঘটনা কমিয়ে আনার জন্য পুলিশ প্রশাসন সদা তৎপর রয়েছে। মেয়েরা যাতে স্কুল-কলেজে নিরাপদে যাওয়া আসা করতে পারে কিংবা কর্মস্থলে নারীরা যাতে যৌন হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের আওতায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে র্যালিও সভা ও সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে। যাতে করে জনগণের মাঝে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি হবে। কামাল হোসাইন/এআরএ/আরআইপি

Advertisement